আরবিসি ডেস্ক : দেশে গত এক দিনে করোনাভাইরাসে আবারও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। উল্লেখিত সময়ে মারা গেছেন আরও ১৬৪ জন। গতকাল মৃত্যু হয় ১৫৩ জনের। এ নিয়ে টানা নয় দিন দেশে শতাধিক মৃত্যু হলো করোনায়।
এদিকে মৃত্যু বাড়ার পাশাপাশি আজ শনাক্তের সংখ্যাতেও রেকর্ড হয়েছে। গত একদিনে শনাক্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৯৬৪ জন। শনাক্তের হার ২৮.৯৯ শতাংশ।
সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯হাজার ৮৭৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৯ হাজার ৯৬৪ জন শনাক্ত হন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮১ জন। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ।
নতুন মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯৬ জন পুরুষ এবং ৫৭ জন নারী। এদের মধ্যে ৫১ জনই খুলনার। এছাড়া ঢাকায় ৪৬, চট্টগ্রামে ১৫, রাজশাহীতে ১২, বরিশালে ৩, সিলেটে ২, রংপুরে ১৫ এবং ময়মনসিংহে ৯ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে করোনায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫ হাজার ৬৫ জন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নতুন মৃতদের ৭০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪৫, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২৪, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১১ এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের ৩ জন রয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গত এক দিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ৪ হাজার ৬৯৮ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৭ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। এর মধ্যে গত ৩০ জুন এক দিনে রেকর্ড ৮ হাজার ৮২২ জন শনাক্ত হন। আর ১ জুলাই এক দিনে রেকর্ড ১৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২ জুলাই শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪৮৩ জন ও শনাক্তের হার ছিল ২৮.২৭ শতাংশ। ১ জুলাই শনাক্তের হার ছিল ২৫.৯০ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই আবার ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউনের জারি করেছে সরকার।
আরবিসি/০৫ জুলাই/ রোজি