স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারার বিলসতি বিলের খাল খননের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। খাল খননের দাবিতে উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের লোকজন মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। তাঁরা ফসল রক্ষা ও মাছচাষের সুবিধার জন্য খালটি খনন করার দাবি জানিয়েছেন। খালটি ভরাট হওয়ার কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ফসলহানি হয় বলে দাবি করা হয়। এর আগে খালটি খননের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের খাঁপুর গ্রামের বিভিন্ন পেশার লোকজন স্থানীয় স্কুল মাঠে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। দুপুর ২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন চলাকালে ও পরবর্তীতে সমাবেশে বক্তব্য দেন স্থানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আবুল হাসান, লুৎফর রহমান, মকছেদ আলী, মাইনুল ইসলাম, মহির উদ্দিন, ফজলুর রহমান, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, উপজেলার ভবানীগঞ্জ স্লুইচগেট থেকে শুরু হয়ে খালটি বিলসতি বিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুলিখালি হয়ে ফর্কিন্নি নদীর সঙ্গে মিশেছে। খালের বিলসতি বিলের অংশটি সংস্কার বা খনন না করায় তা ভরাট হয়ে গেছে। এই কারণে খালটি এখন কৃষকদের আর্শিবাদের পরিবর্তে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরি-বোরো মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ধানসহ অন্যান্য ফসল পানিতে তলিয়ে যায়।
গত ছয়-সাত বছর ধরে উপজেলার খাঁপুর, দ্বীপপুর, বেড়াবাড়ি, হুলিখালীসহ আশপাশের প্রায় ২০০০ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকার ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে খালের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অস্তিত্বহীন খাল চলে গেছে বেদখলে। প্রভাবশালীরা তা দখল করে সেখানে চাষাবাদ করছেন। তবে খালের দুই বছর আগে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবানীগঞ্জ থেকে কসবা প্রায় দুই কিলোমিটার খাল খনন করলেও পরে আর করা হয়নি।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ও এলাকার শতাধিক কৃষক বলেন, খালের কারণে তাঁরা ঠিকমত চাষাবাদ করতে পারছেন না। স্বাধীনতার পূর্বে খালটি খনন করা হলেও কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে আর সেদিকে নজর রাখেনি। খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। এজন্য সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। চাষাবাদ করেও কোনো ফসল ঘরে উঠানো সম্ভব হয় না বলে জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা দ্বীপপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, কৃষকেরা এর আগে খালটি খননের দাবিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। খালটি খনন করে কৃষকদের ফসল রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান বলেন, খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশন না হওয়াতে অনেক ফসল তলিয়ে যায়। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
খাল খননের সঙ্গে যুক্ত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) বাগমারার আঞ্চলিক দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, খালটি খননের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই প্রক্রিয়া শেষে খালের অবশিষ্ট অংশ খনন করা হবে।
আরবিসি/১২ ফেব্রুয়ারী/ রোজি