• রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ
ঢাকা বোট ক্লাবের নব-নির্বাচিত সদস্য খন্দকার হাসান কবিরকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ক্লাবের শুভেচ্ছা তানোরে স্থানীয়দের তৎপরতায় জলাশয় ভরাটের মাটি ফেলা বন্ধ রাজশাহীতে কসমিকা ডিসট্রিবিউশন অফিসে দূর্ধর্ষ ডাকাতি কারিতাস আলোকিত শিশু প্রকল্পের শিশু সুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালা রাণা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ রাজশাহীতে খানকাহ শরীফে লুটপাট,ভাংচুর ও হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার-সংকটে ভারতীয় বিদ্যুতের ১০০ কোটির বকেয়া পরিশোধে হিমশিম বাংলাদেশ ছয়দিন পর সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা: বাবা-ছেলেসহ গ্রেফতার ৩ আল্লাহ তোমার বিচার তুমি করো: পরীমণি

হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জে অক্সিজেন সংকট, হাহাকার

Reporter Name / ৮২ Time View
Update : সোমবার, ৩১ মে, ২০২১

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে হাসপাতালের শয্যা ও অক্সিজেনের সংকট। অক্সিজেন প্রয়োজন এমন অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পেয়ে বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। আবার অনেকে চলে যাচ্ছেন পার্শ্ববর্তী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দেশে করোনার নতুন হটস্পট হয়ে ওঠা চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে।

জেলা সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, তাদের জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৭২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬০০ এর মতো শনাক্ত হয়েছে গত ঈদের পর থেকে। ঈদের আগে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ১৪ শতাংশ, সেখানে কয়েক দিনের মধ্যে বাড়তে বাড়তে ২৬ মে ৫৫ শতাংশ এবং তারপর ৬২ শতাংশে উঠেছিল। তবে পরে একটু কমেছে। কিন্তু রোববার ফের সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২.৪৫ শতাংশে।

সিভিল সার্জন জানান, এ জেলায় এখন ৫৭৬ জন করোনা রোগী আছেন। তাঁদের মধ্যে জেলার তিন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২২ জন। জেলা সদর হাসপাতালে ১৯ জন, শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজন এবং গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন চিকিৎসাধীন আছেন। এর বাইরে সদর হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১৬ জন। অনেক রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর শিবগঞ্জ উপজেলার রোগীদের বড় অংশ রাজশাহী মেডিকেলে চলে যাচ্ছেন, যার খোঁজ তাদের কাছে আসছে না।

এ জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৭ জন মারা গেছেন গত ১৩ মে থেকে। গত শুক্রবার চারজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি বলে সিভিল সার্জন জানিয়েছেন।

তবে এদিন রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে সাতজনই চাঁপাইনবাবগঞ্জের বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস জানিয়েছেন। সেখানে মারা যাওয়া বাকিদের মধ্যে দুজন রাজশাহীর, দুজন নওগাঁর এবং একজন নাটোরের।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা ডা. নাহিদ ইসলাম মুন জানান, তাদের ওখানে করোনা রোগীদের জন্য ১৯টি সিট আছে। সেখানে এখন ১৯ জন রোগীই ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে একজন ভারতফেরত। তিনি বাদে বাকি সবাইকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তির মতো অনেক রোগী আসছে। কিন্তু সিট না থাকায় নতুন রোগী ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।

অক্সিজেন সংকট নিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, তাদের এখানে ভর্তি রোগীদেরই ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে মোট ৬০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। সেগুলোর মধ্যে ৩০টি ব্যবহার করা যায়, বাকি ৩০টি অক্সিজেন ভরে আনার জন্য পাঠাতে হয়। কিন্তু ঠিকমতো অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। স্পেকট্রা নামের একটি কোম্পানি মানিকগঞ্জ থেকে অক্সিজেন এনে সরবরাহ করে। তারা এখন ঠিকমতো দিতে পারছে না।

স্পেকট্রার পক্ষ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়াও রাজশাহী ও নাটোর এলাকায় অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্বে আছেন মীর আখতারুল। তিনি বলেন, হঠাৎ করে রোগী বেড়ে যাওয়ায় অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা রোগীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। সেখানে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ’ জনকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।

হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোগীর চাপ পড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রোগীদের জন্য ওয়ার্ডে জায়গা দিতেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। করোনা ওয়ার্ডে জায়গা নেই। তারা নতুন ওয়ার্ড চালুর জন্য কাজ করছেন।

তিনি বলেন, রোববার ওই হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০৯ জন। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭৫ জন। বাকি ১৩৪ জন উপসর্গ নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১৩ জন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিট সম্প্রসারণ এবং অক্সিজেনসহ আনুষঙ্গিক চিকিৎসাসামগ্রীর সরবরাহ বাড়ানোর বিকল্প দেখছেন না ডা. নাহিদ ইসলাম মুন। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন জেলা সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুলও। তিনি বলেন, এখন সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিট বাড়ানো দরকার হয়ে পড়েছে। সেটাকে ৫০ আসনে উন্নীত করার জন্য স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।

আরবিসি/৩১ মে/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category