আরবিসি ডেস্ক : ভিডিও মাধ্যমে অতিরিক্ত মিটিং করা মানে বাড়তি মানসিক চাপ।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ‘ভিডিও কনফারেন্সিং’ বা ভিডিও মাধ্যমে আলোচনায় অংশগ্রহণকারীর মন ও শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বর্তমান মহামারীর কারণে ‘হোম অফিস’ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে ঘর থেকে সহকর্মী বা কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে মত বিনিময় করতে গিয়ে ভিডিও মাধ্যমের আশ্রয় নিতে হচ্ছে।
আর এই মাধ্যমে বহুল ব্যবহৃত ব্যবস্থাটি হল ‘জুম’।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া’তে অবস্থিত ‘ওল্ড ডোমিনিয়ন’ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে অতিরিক্ত ‘জুম মিটিং’ বা ‘ভিডিও কনফারেন্স’ কর্মীদের জন্য ক্ষতিকর।
‘জুম অবসাদ’ মিথ্যে নয়
এই গবেষণার জন্য বিভিন্ন কাজের সঙ্গে জড়িত অর্ধশতাধিক পেশাদার কর্মী নির্বাচন করা হয়। আর তাদের নিয়মিত করা ‘ভিডিও কনফারেন্সিং’য়ের পর অনুভূতিগুলো প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে লিখিত আকারে জমা দিতে বলা হয়।
‘জার্নাল অফ অ্যাপলাইড সাইকোলজি’তে প্রকাশিত এই পর্যবেক্ষণ-মূলক গবেষণা-পত্রে উল্লেখ করা হয় যে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কেবল সাত শতাংশ জানিয়েছে তাদের মাঝে কোনো ক্লান্তি কাজ করেনি।
অন্যদের ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব ছিল। সকালে কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর তীব্রতাও বাড়ে বলে জানায় তারা।
‘জুম মিটিং’ আসলেই ক্লান্তিকর
অতিরিক্ত ‘ভিডিও কনফারেন্স’ করার কারণে শুধু মন নয় শরীরও ক্লান্ত হয়ে যায়।
মানসিক-স্বাস্থ্য-বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘সাইপোস্ট’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘ওল্ড ডোমিনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অ্যান্ড্রু এ. বেনেট বলেন, “আসল যে বিষয়টা আমরা খুঁজে পেয়েছি তা হল, ভিডিও কনফারেন্সের পর ক্লান্তবোধ করাটা মিথ্যে নয়। এই অভিজ্ঞতা কারও একার নয়, অধিকাংশের ক্ষেত্রেই এই ফলাফল দেখা যায়।”
গবেষণায় অংশগ্রহণ করা ৯২ শতাংশের মাঝে এই ক্লান্তি দেখা গেছে। আর এর পেছনে বিজ্ঞানসম্মত কারণও রয়েছে।
ক্লান্তিবোধের কারণ
ভিডিও মিটিংয়ে অতিরিক্ত মনোযোগ দিতে হয়। আর এই কারণেই ক্লান্ত লাগে বেশি। আর সামনাসামনি বসে আলোচনার চাইতে ভিডিও মাধ্যমে কথা বলা ও মত বিনিময় হয় কম।
সাইপোস্ট’য়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ক্লাস চলার সময় ছাত্রছাত্রীরা যেমন শিক্ষকদের দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করে তেমনি জুম মিটিংয়েও সদস্যরা মনোযোগী হতে ক্যামেরার দিকে গভীর মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন যা মানসিক চাপ বাড়ায়।
জুম মিটিংয়ের ক্লান্তি দূর করার উপায়
জুম মিটিংয়ের ক্লান্তি দূর করতে ড. বেনেট তিনটি পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রথমত, সকালে বা দুপুরে মিটিং রাখার চেষ্টা করা। কোনোভাবেই তা সন্ধ্যার পর নয়।
দ্বিতীয়ত, যখন কথা বলছেন না তখন মাইক্রোফোন ‘মিউট’ করে রাখা।
এবং তৃতীয়ত নিজের ‘গ্রুপ’ বা দল সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা।
ড. বেনেটের মতে, “দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ক্লন্তিভাব অনেকটাই কমিয়ে আনে।”
সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা মানসিক অস্থিরতা কমানোর পাশাপাশি মিটিং করার আগ্রহ বাড়ায়।
এছাড়াও মনে রাখতে হবে ক্যামেরার দিকে স্থির হয়ে বসে থাকাও শরীরে নানান ক্ষতিসাধন করে।
ছবি: রয়টার্স।
আরবিসি/২৪ মে/ রোজি