• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন

বাহারী ফুলে শোভিত রাজশাহী

রোজিনা সুলতানা রোজি / ৩৬৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১

গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে এখন রাজশাহী নগরে হাজারো ফুলের সমারোহ। হলুদ সোনালু কিংবা বেগুনি জারুল ও লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার রক্তঝরা হাসি এখন যে কারোই নজর কাড়ছে। চলতি করোনাকালে বাইরে তেমন মানুষজন নেই। তাইবলে থেমে থাকেনি প্রকৃতি। রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এখন দৃষ্টি মেললেই ফুলের সমারোহ। লাল হলুদ রঙের মিশ্রনে বাহারী ফুল এখন শোভা ছড়াচ্ছে। আর কৃষ্ণচূড়া যেন রঙ ছড়িয়েছে ডালে ডালে। ফুটেছে রাধাচূড়াও।

ঋতু চক্রের আবর্তনে নয়নাভিরাম গ্রীষ্মকালীন ফুলের এক বর্ণিল আয়োজন নিয়ে এখন সেজেছে রাজশাহীর প্রকৃতি। বৈশাখ মানেই ভিন্ন সাজে বাংলার প্রকৃতি। আকাশে গনগনে সূর্য। রাজশাহী মহানগরীর ঈদগাহ মাঠ হয়ে নদীর তীর ধরে ভেড়িপাড়া মোড়। প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের পাশে শোভা পাচ্ছে নানা প্রজাতির ফুল। নগরীর আলিফ লাম মীম ভাটা এলাকা থেকে শুরু করে ফল গবেষণা ইন্সটিটিউট পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তাটির মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া সড়কের পাশের গাছেও এখন শোভা পাচ্ছে রঙিন ফুল।
নগরীর রেলগেট থেকে সিঅ্যান্ডবি মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার সড়ক বিভাজনে সোভা পাচ্ছে ফুল আর সবুজে ছেয়ে যাওয়া নানা প্রজাতির গাছে। তবে ফুলগাছের সংখ্যায় বেশি। ফলে রাজশাহী নগরীর সড়ক বিভাজন আর তার পাশের থাকা গাছগুলোতে যেনো রঙিন ফুলের পশরা। পুরো নগরী ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে। এতে করে পথচারীদের মাঝে বাড়তি ভালোলাগাও কাজ করছে। নগরীর সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।

রাজশাহী নগরীর সড়কের পাশের গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে নীল কৃষ্ণচূড়া, রাধাকৃষ্ণ, লাল কৃষ্ণচূড়া, কাঠ গোলাপ। গোলাপী, বেগুনি, লাল, নীলসহ নানা রঙয়ের ফুলে ফুলে এ এক অন্যন্য সৌন্দর্য ছড়িয়েছে পুরো নগরীজুড়ে।

গ্রীষ্মের চোখ জুড়ানো বর্ণিল ফুল সবার মনকে নাড়া দেয় খুব গভীরভাবে। ইট পাথরের শহরে এখন চোখে পড়বে এসব বাহারি ফুল। রাজশাহী নগরীর এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চোখ মেললেই এখন নয়নাভিরাম দৃশ্য। গাছে গাছে ফুলের অপরূপ সমারোহ। এদের মধ্যে সবার কাছে আকর্ষনীয় কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত একটি ফুল।

বাংলা কাব্য, সাহিত্য, সংগীত ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা ব্যাপকভাবে উঠে এসেছে। শোভাবর্ধণকারী এ বৃক্ষটি গ্রামের পাশাপাশি এখনো তার অস্তিত্ব নিয়ে কোনো টিকে আছে শহরের পথে প্রান্তরে। এসব কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে এখন লেগেছে আগুন। শুধু কী কৃষ্ণচূড়া। এই প্রতৃতিতে এখন শোভা ছড়াচ্ছে রঙিন হয়ে ফোটা আরো হাজারো ফুল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, জারুল, সোনালু, হিজল, মে ফ্লাওয়ার। গ্রীষ্মে এখন কৃষ্ণচূড়ার হাসিতে মুগ্ধ হয়ে পড়েন সবাই।

চোখ ধাঁধাঁনো বেগুনি রংয়ের বিচ্ছুরণ নিয়ে প্রকৃতিতে নিজের আগমনের কথা জানান দিয়েছে জারুল ফুল। গ্রীষ্মের ফুল হিসেবে জারুল অতুলনীয়। বর্তমানে জারুল গাছ খুবই বিরল। তবে রাজশাহী নগরে এখনো জারুলের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। চমৎকার বেগুনি রংয়ে রাঙ্গানো এ জারুল ফুল মনের গহীনে জাগ্রত করে এক অন্য রকম ভাললাগা।

লাল বেগুনির পাশাপাশি হলুদে ছাওয়া ঝুমকার মতো ঝুলে থাকা সোনালু ফুল যে কারো মন ছুঁয়ে যাবে। সোনালু গাছ আমাদের দেশে ঔষধি গাছ হিসেবেই বেশি পরিচিত। গ্রামাঞ্চলে এ গাছকে অনেকে বানর লাঠি গাছও বলে থাকে।

ঐতিহ্যবাহী ফুল গাছের মধ্যে হিজল গাছ একটি। এ গাছটি আমাদের প্রকৃতি থেকে দিন দিন হারিয়েই যাচ্ছে। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে হিজল গাছে ফুল ফুটতে শুরু করে। রক্ত রাঙ্গা হিজল ফুলের লহরি আর মাতাল ঘ্রাণ সবাইকে বিমোহিত করে তোলে। ছোট আকৃতির রক্ত রাঙ্গা হিজল ফুল গাছের নিচে ঝরে পড়ে সৃষ্টি করে এক দৃষ্টি নন্দন পুষ্প শয্যা। এই গ্রীষ্মে হিজলেরওস দেখা মিলেছে রাজশাহী অঞ্চলে।

গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে আর করোনার কারণে চারদিক যখন খাঁ খাঁ করছে, এমন পরিস্থিতিতে রাস্তার পাশে প্রকৃতিতে সাজানো যেন ব্যতিক্রমী এক দৃশ্য।

প্রকৃতি তার আপন মহিমায় ঠিকই নিজেকে তুলে ধরেছে। অনেকের বাসাবাড়ির ছাদেও নানা রকম ফুল ফুটে থাকতে দেখা গেছে এই গ্রীষ্মে। শহুরে জীবনের হাজারও ব্যস্ততার ফাঁকে এমন হাজারো ফুলের স্বর্গরাজ্য যেন প্রশান্তির দোলা দেয় মানবজীবনে। নগরীর উপশহরের শাহীন মঞ্জিল, সাগরপাড়ার তনুশ্রি ভিলা ছাড়াও বিভিন্ন বাড়ির ছাদে ছাদে দেখা মিলেছে হরেক ফুলের।

আরবিসি/২০ মে/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category