স্টাফ রিপোর্টার:
সচিবালয়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে হেনস্তা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি (রুরু)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে (১৮ মে) সংগঠনের সভাপতি আরাফাত রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রিজভী আহমেদ এক যৌথ বিবৃতি এসব তথ্য জানান। বিবৃতিতে তাঁরা রোজিনার ইসলামের মুক্তির পাশাপাশি, এই ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানান।
যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে সহজেই বোঝা যায় যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরেই তাঁর সাথে এই অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন তাঁর কর্মরত গণমাধ্যমে।
তাঁর সাথে সচিবালয়ে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা যে সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ তা একেবারে দিবালোকের মতো স্পষ্ট। সরকারি আমলা থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীনরা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে বরাবরই গণমাধ্যমের কণ্ঠস্বর রোধ করতে চায়। কিন্তু হামলা, নির্যাতন কিংবা হেনস্থা করে সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সাংবাদিক নির্যাতন বা হেনস্তার মতো ঘটনাগুলো দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের পাঁয়তারা বলে মনে করছি। সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নির্যাতন রোধে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামসহ সকল সাংবাদিকের জন্য নির্বিঘ্নে কাজ পরিচালনা করার পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি সরানো ও অনুমতি না নিয়ে ছবি তোলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তাঁকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন করা হয়। রোজিনা ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকেও জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। তবে পুলিশের রিমাণ্ড আবেদন নিয়ে শুনানির পর আদালত তা নামঞ্জুর করে এবং তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
আরবিসি/১৮ মে/এলএইচ