স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন ১৪ ফেব্রুয়ারী নওহাটা পৌর নির্বাচন। নির্বাচনে নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আব্দুল বারী খান। তার অভিযোগ, নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই বিভিন্নরকম বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্বাচনী প্রচারণা অফিস ভাঙচুর ও আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিকেলে নওহাটা আকবরী মসজিদের পাশে তার নিজ নির্বাচনী অফিসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। এসময় প্রচারণা শুরুর পর ১ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ছয়টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে। কিন্তু কোন প্রতিকার পাননি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ কর্তৃক বিভিন্নভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। হাফিজুর রহমান হাফিজ ও তার সমর্থকরা বহিরাগতদের সাথে নিয়ে বিভিন্নভাবে আমার নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিচ্ছে, এমনকি আমার নির্বাচনী অফিস উদ্দেশ্যপ্রণীতভাবে ভেঙ্গে ফেলেছে। মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ ও তার সমর্থকরা বহিরাগতদের সাথে নিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করার পরিকল্পনা করছে। যা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের সামিল।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধিতে উল্লেখ আছে, পৌরসভা নির্বাচনে কোন সংসদ সদস্য নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহন করতে পারবেনা। তা স্বত্বেও স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন নির্বাচনী অচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রতিদিন একাধিক নির্বাচনী কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করছেন। তারা নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন ভোটারদের মাঝে কম্বল বিতরণ করছেন, এতে করে নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, মূলত আমার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মোঃ হাফিজুর রহমান হাফিজ জনবিচ্ছিন্ন একজন মানুষ। জনগনের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা নেই। তৃণমূল আওয়ামী লীগের কাছেও তার গ্রহণযোগ্যতা নেই। দলীয় নমিনেশনের পূর্বে প্রার্থী বাছাইয়ে হাফিজুর রহমান হাফিজ তৃণমূল নেতৃবৃন্দের একটি মাত্র ভোট পেয়েছেন। তার গ্রহনযোগ্যতা না থাকার কারনে সে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় আসন্ন পৌর নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে জনগন সঠিক ও সুষ্ঠভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না। গণতন্ত্রের মানসকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের যে ধারা অব্যাহত রেখেছেন, তা ব্যাহত করার চেষ্টা করছেন তারা। আসন্ন নওহাটা পৌরসভা নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয় এবং জনগণ যাতে সঠিকভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান হাফিজ সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করে বলেন, আমি বা আমার কোন নেতাকর্মীরা মেয়র প্রার্থী বারী খানের কোন নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দেয় নাই, এমনকি তার নির্বাচনী অফিস উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগটিও ভিত্তিহীন। বারী খানের নারিকেল গাছ প্রতীকের নিশ্চিত পরাজয় হবে জেনেই তিনি এসব মিথ্যা অভিযোগ করে ভোটারদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
জানতে চাইলে পবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, অভিযোগ করে প্রতিকার পাচ্ছেন না এ কথাটা ঠিক না। নওহাটা পৌর এলাকাটি তিনটি থানার মধ্যে পড়েছে। সব থানার ওসিদের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেয়ার বিষয়টি তাদের নজরে আসেনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ মুকুল, আইন বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম, নওহাটা বাজার সমিটিতর সদস্য উমর আলী, নওহাটা ফাযিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাহবুব রহমান সরকার, পৌর কৃষক লীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম সাফি প্রমুখ।
আরবিসি/০৯ ফেব্রুয়ারি/ রোজি