নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁয় ইরি-বোরো ধানকাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি, দিঘলি, সরল-শিকারপুরসহ অন্যান্য বিল এবং পাশের উপজেলা মান্দা, আত্রাই ও রাণীনগরের নিম্নাঞ্চলে ধান কাটছে কৃষক। ধান ঘরে তুলতে কৃষি শ্রমিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে।
শ্রমিকদের থাকার জন্য গেল বছরের মত এবারও বিদ্যালয় কক্ষ খুলে দেয়ার দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। স্বপ্নের চকচকে সোনালী পাকা ধান কৃষকের ঘরে উঠছে। নতুন ধানের সৌরভ ও পাখির কলতানে এখন মুখরিত মাঠগুলো। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্য বিলের জমির প্রায় সব ধানই ঘরে উঠবে আশা করছেন চাষিরা।
কৃষকরা বলছেন, গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবার বিলের জমিগুলোতে ধানের ফলন ভাল হয়েছে । প্রতি বিঘায় মোটা ধানের ফলন হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ মন। সরু ধানের ফলন আসছে ২৫ থেকে ২৮ মণ। এটিকে বাম্পার ফলন বলছেন কৃষকরা।
তবে দু-একটি জমির ধান বালাইয়ের আক্রমণে নষ্ট হয়েছে। হাঁসাইগাড়ি বিলের বোরো চাষি আবুল হোসেন বলেন চলতি মওসুমের উৎপাদন বিঘাপ্রতি গেল বছরের চেয়ে ৪ থেকে ৫ মন বেশী হচ্ছে। প্রতি বিঘায় খরচ পড়েছে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।
ময়েন উদ্দিন নামে অপর এক চাষি বলেন নতুন ধানের বাজার দর ভাল। প্রতিমন ধান বিক্রি হচ্ছে ৯শ’ থেকে সাড়ে ৯শ’ টাকা মন দরে। চাষিরা অভিযোগ করে বলেন-ভরা মওসুমে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দর কমায়। বাধ্য হয়ে কম দরে ধান বিক্রি করতে হয়। তাই বাজারে তদারকি বাড়ানো, পাশাপাশি ফলন ও উৎপাদন খরচ হিসাব করে সরকারী দর বেঁধে দেয়ার দাবিও জানান কৃষকরা। বিলের জমি থেকে উৎপাদিত ধান এখন ঘরে তোলা’ই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ হিসেবে চাষিরা বলেন, বৃষ্টি ও উজানের পানিতে ফসল ডুবে যাওয়ার শংকা রয়েছে। এরমধ্যে লকডাউনে শ্রমিক সংকটের দুশ্চিন্তায় পরেছেন তারা।
তবে শ্রমিক ব্যবস্থাপনায় মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অন-লাইন প্লাটফ্রমে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় যুক্তহয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় গেল বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। শ্রম উদ্বৃত্ত্ব জেলা থেকে সশ্য শ্রমিক আনা-নেয়ার ব্যবস্থায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। এসময় শ্রমিকদের থাকার জন্য বিদ্যালয় কক্ষ ব্যবহারের পরামর্শদেন মন্ত্রী।
বৈঠকে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন চলতি মওসুমে নওগাঁয় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার হেক্টর জমিতে। নতুন ধান মাড়াইয়ের পর ধানের আদ্রতা পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ২২। পুরোদমে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হতে আরো সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে জানান তিনি।
আরবিসি/২০ এপ্রিল/ রোজি