স্টাফ রিপোর্টার : কর্মব্যস্ত নগর জীবনে ঘরে পিঠা পায়েস তৈরি খুব বেশি সম্ভব হয়ে ওঠেনা। আর বাসায় একসাথে দুই বা ততোধিক স্বাদের পিঠা তৈরি করাও সম্ভব হয়না। সেই অতৃপ্তি মিটিয়েছে পিঠা মেলা। হ্যাঁ, রাজশাহী নগরবাসী হরেক রকমের ঐতিহ্যবাহী পিঠার স্বাদ নিয়েছেন শাহমখদুম কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত মেলায়।
রাজশাহী উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজন করেছে ২ দিনব্যাপি এ পিঠা মেলা। শনিবার রাতেই শেষ হয়েছে মেলাটি। আয়োজকরা বলছেন, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠাকে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতেই এই মেলার আয়োজন।
শহুরে জীবনের ব্যস্ততায় মেলেনা অবসর। নানা পদের পিঠার স্বাদ থেকে বঞ্চিত হন তরুণরা। তাদের সেই আক্ষেপ মিটিয়েছে পিঠা মেলা। ঐতিহ্যবাহী পিঠার স্বাদে বাঙ্গালীর ঐতিহ্য জানা ও শহুরে যানজটের অবসরে এমন আয়োজন মুগ্ধ করেছে সবাইকে।
পিঠা মেলায় আসা দর্শনার্থী ফাতেমা খাতুন বলেন, এখানে এসে দুধ পুলি, খেজুর গুড়ের চিতই পিঠা, পার্টি শাপটাসহ হরেক রকমের পিঠা খেয়েছি। দেখেছি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নানান রকমের পিঠা। যেগুলো আমরা নতুন প্রজন্ম হারাতে বসেছি।
নগরীর সাগরপাড়া থেকে এসেছিলেন আনিকা ইসলাম নামে আরেক তরুণী। তিনি বলেন, আগে তো দাদা-বাড়ি, নানা-বাড়িতে প্রতি বছরই পিঠা খেতে যাওয়া হতো। তবে এবছর করোনার জন্য যাওয়া হয়নি। এখানে এসে ভালো লাগছে, দাদি-নানিদের মূখে শুনেছি পৌষ মাসে পিঠা উৎসবের কথা। সেই দিনগুলো আমরা তরুণরা এখানে এসে উপভোগ করছি।
মেলায় স্টল ছিল ২২টি। ২২ জন নারী উদ্যোক্তা নিজেদের স্টলগুলো পিঠা দিয়ে সুসজ্জিত করে রেখেছিলেন। তাদেরই একজন রানী পিঠা ঘরের স্বত্বাধিকারী রানী। কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, প্রতি বছরই তিনি মেলায় অংশ নেন। প্রায় ৩০ রকমের পিঠার পসরা বসিয়েছেন। করোনার কারনে অন্যান্য বছরের তুলনায় মানুষের আগমন কম হলেও বেচাকেনা ভালোই হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজশাহী উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রেজেটি নাজনীন বলেন, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এই পিঠা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিবছরই আমরা এই মেলার আয়োজন করি। এই মেলার মাধ্যমে আমাদের ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারছি, এটাও একটা বড় তৃপ্তির জায়গা। এতে চরম আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, এই মেলার মাধ্যমে আমরা নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছি। অনেক নারীর মধ্যে বিভিন্ন গুণ রয়েছে, কিন্তু তারা প্রয়োগের কোনো ক্ষেত্র পায় না, তাদের আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম, মেলার আয়োজন করে তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলছি।
রেজেটি নাজনীন বলেন, বছর পাঁচেক আগে আমরা ৮টি স্টল দিয়ে এই মেলার যাত্রা শুরু করেছিলাম। এবছর ২২টি স্টলে ২২ জন নারী উদ্যোক্তা তাদের পিঠার পসরা সাজিয়েছেন।
আরবিসি/০৬ ফেব্রুয়ারি/ রোজি