আরবিসি ডেস্ক: হাঁটলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়, যা আমাদের সবারই জানা। এ কারণেই আধুনিক সময়ে নতুন প্রজন্মও বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন হাঁটাকে। কেউ সকালে, কেউ বিকেলে বা সন্ধ্যায়, আবার কেউ অফিসে যাওয়া-আসার সময়টুকু হেঁটে থাকেন। মূলত সুস্থ থাকার জন্য হাঁটার অভ্যাসে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন সবাই।
নিয়মিত হাঁটাহাঁটির মধ্যে থাকা মানুষের মনে নতুন এক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলে থাকেন, খালি পেটে নাকি ভরা পেটে―কখন হাঁটলে উপকার বেশি? এ নিয়ে যখন নানা চর্চা, সেই সময় বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আশিস মিত্র। এবার তাহলে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
প্রতিদিন হাঁটা: সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন হাঁটা অতীব জরুরি। এতে ফুসফুসের জোর বাড়ে। পায়ের পেশি ও হাড় মজবুত হয়। শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টর ব্যথা কমে। আবার ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। সবথেকে বেশি উপকার হয় অনাকাঙ্ক্ষিত বেড়ে যাওয়া স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে। কেননা, হাঁটাহাঁটির ফলে শরীর থেকে মেদ কমে। একইসঙ্গে ছোট ছোট বিভিন্ন অসুখ থেকেও পরিত্রাণ মিলে।
খাওয়ার পর নাকি খালি পেটে হাঁটবেন: পেট খালি অবস্থায় হাঁটাহাঁটি করা ঠিক নয় বলেই জানিয়েছেন ডা. আশিস মিত্র। তার ভাষ্যমতে, হাঁটার আগে হালকা কিছু খেয়ে নেয়া উচিত। তাতে শরীরে শক্তির ঘাটতি কিছুটা হলেও মিটে যায়। আর হাঁটার সময় অল্পতেই ক্লান্তবোধ হতে হবে না। মাথাও ঘোরাবে না। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসের রোগী, তাদের অবশ্যই কিছু খাবার খাওয়ার পর হাঁটতে হবে। তা না হলে সুগার ফল করার ঝুঁকি থাকবে। আর বাসা-বাড়ির বাইরে হঠাৎ সুগার ফল করলে এ থেকে মৃত্যুও হতে পারে। এ জন্য হাঁটার আগে অবশ্যই কিছু খেয়ে তবেই বের হবেন।
ভরা পেটেও হাঁটাহাঁটি নয়: হাঁটার আগে কিছু খাওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাই বলে পেটভর্তি খাবার খাওয়ার কথা বলা হয়নি। ভুলেও এমনটা করা যাবে না। তাতে হজমে সমস্যা হবে। আবার হার্টেও চাপ পড়তে পারে। তবে খাবার খাওয়ার পর এক থেকে দুই ঘণ্টা পর হাঁটতে বের হতে পারেন। তাতেই উপকার পাবেন বলে মতামত বিশেষজ্ঞদের।
কী খেয়ে হাঁটার জন্য বের হবেন: সকালে হাঁটতে যাওয়ার আগে অল্প একটু লিকার চা ও বিস্কুট অথবা ছোলা, আমন্ড বা পিস্তার মতো বাদাম খেতে পারেন। এতে শরীর সুস্থ থাকবে। তবে যাদের একবার সুগার ফল হয়েছে, তাদের পকেটে বা হাতের মুঠোয় একটি লজেন্স বা গ্লুকোজ রাখতে হবে। কারণ, হাঁটাহাঁটির সময় যদি ঘাম বেশি হয়, শরীর আনছান করে বা মাথা ঘোরে, তাহলে লজেন্স বা গ্লুকোজ খেয়ে নিতে হবে। এরপর কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
সকালে না বিকেলে, কখন হাঁটতে হবে: ডা. আশিস মিত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, যখন সময় পাবেন তখনই হাঁটার জন্য বেরিয়ে পড়তে হবে। বর্তমান সময়ের মানুষ বেশ নিয়মের মধ্যে সময় কাটিয়ে থাকেন। খুব একটা ফ্রি সময় থাকে না। এ জন্য নিজের সময় অনুযায়ী হেঁটে নিতে হবে। তবে অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটতে হবে। এ জন্য ভালো মানের এক জোড়া জুতা নিতে হবে। তাতে পায়ের উপর চাপ অনেকটা কম পড়বে। ব্যথা হওয়ার আশঙ্কাও অনেক কম থাকবে।