রাজশাহীতে গণপিটুনিতে আহত আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। তিনি রাবি’র মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।
এর আগে শনিবার বিকেলে বিনোদপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করে ছাত্র জনতা। এরপর তিন দফায় গণপিটুনি দিয়ে বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার শারীরীক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় রাজশাহী মেডিকেলে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
প্রসঙ্গত, নিহত ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ২০১৪ সালে শিবিরের হামলায় মারাত্মক আহতসহ এক পা হারিয়েছিলেন। যার ফলে ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মীর তাফেয়া সিদ্দিকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পদে মাসুদকে নিয়োগ দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার পদে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সহকর্মী ও একই মতাদর্শের রাজনৈতিক কর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা প্রশ্ন রেখেছেন, প্লাস্টিকের পা ছাড়া যে ব্যক্তি চলতে পারে না, স্কুটি ছাড়া একস্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে না। তিনি কিভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাবেন? এমন হত্যার ঘটনার বিচাার দাবি করেছেন তারা।
যদিও এই হত্যার পর কারও নামে কোন মামলা হয়নি। বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম মাসুদ পারভেজ ও ডিউটি অফিসার রেজাউল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে আহত অবস্থায় তিনজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তারা হলেন- আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (৩০), কটা (৩২) এবং সনি (২৮)। এদের মধ্যে মুমূর্ষূ অবস্থায় ছিলেন মাসুদ। পরে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ১২টার দিকে মাসুদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তার মরদেহ এখনও রাজশাহী মেডিকেলের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ তাদের হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও জানান, তার মৃত্যুতে এখনও কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিহত মাসুদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর খাঁসের হাট গ্রামে। তার বাবার নাম রফিকুল ইসলাম।
জানা যায়, মাসুদ ছাড়া আটক আরও দুইজনের বিরুদ্ধে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগ এনেছেন ছাত্ররা।