আরবিসি ডেস্ক : “ঔষধসহ নিত্যপন্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের’ দাবিতে রাজশাহী ক্যাবের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১ টার দিকে মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে সিনিয়র সাংবাদিক রাজশাহী ক্যাবের উপদেষ্টা এড. মোস্তাফিজুর রহমান খান আলমের সভাপতিত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তাফা মামুনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ক্যাবের উপদেষ্টা ও সোনালী সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক লিয়াকত আলী, রাজশাহী প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাত খান,রাজশাহী ভাবনার সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সেফ দা ন্যাচার চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, দিনের আলো হিজরা সংগঠনের সভাপতি মোহনা, প্রচার সম্পাদক সন্জু আহমেদ, জয়িতা ক্যাবের সদস্য রহিমা বেগম, কবি অনিরুদ্ধ, পবা ক্যাবের সভাপতি সাংবাদিক নাজমুল হক প্রমুখ।
রাজশাহী ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তাফা মামুন লিখত বক্তব্যে বলেন ওষুধসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অবৈধ বাজার সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে। ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য পৃথক একটি ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করতে হবে।
বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সকল পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর ফলে সব ধরনের ভোক্তারা বিশেষ করে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবৃত্ত আয়ের ভোক্তারা এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। ভোক্তাদের নাভিশ্বাস দিন দিন বাড়ছে। একদিকে সরকার বলছে দেশে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের যথেষ্ট মজুদ আছে, দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
অন্যদিকে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এলসি সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কথা অসাধু ব্যবসায়ী বারবার বলে আসছেন। আর এর আড়ালে বাজার কারসাজি বা সিন্ডিকেট তৈরি করে পণ্যের দাম অসাধু ব্যবসায়ীরা বৃদ্ধি করছেন।
চাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজ, আলু, মসলা, আটা-ময়দা, বোতলজাত পানি, ডিম, মাংস কোনো ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটের বাইরে নেই। একেক সময় একেক সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ভোক্তাদের নিকট হাতে কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠন করা হচ্ছে। এছাড়া হাত বদল হয়েও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্যাব মনে করে বাজারের এই অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙ্গার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে করতে হবে। তা না হলে সিন্ডিকেটের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। অসহায় ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।
দুই বছর আগে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয়া হলেও সে সময়ে বাজারে থাকা ৯০ শতাংশের বেশি ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন আবারো নতুন করে ওষুধের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেশ কিছু ওষুধের দাম এক লাফে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘ভোক্তা শ্রেণি’ দেশের সর্ব বৃহৎ অর্থনৈতিক গোষ্ঠী। প্রতিবেশী দেশ ভারত ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও কল্যাণে ১৯৯৭ সালে একটি স্বতন্ত্র ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করেছে। একজন মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে দুইটি বিভাগ নিয়ে গঠিত এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। সরকার প্রতিনিয়ত নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের ওপর কি প্রভাব ফেলবে সে বিবেচনা উপেক্ষিত হচ্ছে।
এমতাবস্থায় ভোক্তা স্বার্থ বিবেচনা, সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ভোক্তাদের স্বার্থের বিষয়টি তুলে ধরা, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রমে সমন্বয় সাধন, ভোগ্যপণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, আমদানির সঠিক পরিসংখ্যান সংরক্ষণ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল থেকে দরিদ্র, স্বল্প আয় এবং নিম্নমধ্যবিত্তের ভোক্তারা যাতে বঞ্চিত না হোন সে লক্ষ্যে জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে রাখার উদ্দেশ্যে ১৫ থেকে ২০টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব অর্পণ করে অবিলম্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি পৃথক বিভাগ অথবা একটি স্বতন্ত্র ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠনের দাবি করছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
ক্যাবের এই দাবি দেশের ১৮ কোটি ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য। আমরা আশা করি, আমাদের এই দাবির প্রতি আপনারা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে ক্যাবের আন্দোলনকে আরও বেগবান ও সাফল্যমণ্ডিত করবেন।
আরবিসি/২0ফেব্রুয়ারী/অর্চনা