• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ অপরাহ্ন

রাবি অধিভুক্ত ইনস্টিটিউটে মানববন্ধন, পরিচালককে শিক্ষার্থীদের মারধর

Reporter Name / ৯০ Time View
Update : বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধিভুক্ত রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্সের পরিচালকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে ইনস্টিটিউডের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে মারধর করেছে তারা।

বুধবার (১ মার্চ) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন ইনস্টিটিউডের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাফিজুর রহমানকে মারধর করেন তারা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিলেন অধ্যাপক হাফিজুর রহমান। শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে তার কাছে অনুরোধ জানান তাদের ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রম নিয়মিত করার জন্য। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের পায়ে ধরে। তাদের ইন্সটিটিউটের শিক্ষাকার্যক্রম সচল করার জন্য। পরবর্তীতে ওই শিক্ষক রিক্সাচালককে বলে তাদের উপর দিয়ে রিক্সা চালিয়ে দেওয়ার জন্য। তাদেরকে ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলে। এরপর শিক্ষার্থীরা তার উপর চড়াও হয়। তাকে তুলে নিয়ে ইনস্টিটিউটের দিকে নিয়ে যেতে চায়।

এসময় রাজশাহী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং আশেপাশে থাকা শিক্ষার্থীরা ‘চোর’ ধরা পড়েছে মনে করে মারধর করতে থাকে। পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও এবং তাকে উদ্ধার করে কাজলা পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
নগরের মতিয়ার থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হঠাৎ তার উপর চড়াও হয়। এসময় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। তবে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ জানালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইনস্টিটিউটে ক্লাস-পরীক্ষা কিছুই হয় না। সেমিস্টার ফি পর্যন্ত তারা দূর্নীতি করে খেয়ে ফেলছে। তাই অবিলম্বে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর পাশাপাশি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইনিস্টিটিউটের পরিচালকদের (ড. এফএম আলী হায়দার ও ড. হাফিজুর রহমান) কারণে আমাদের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। অনিয়ম-দুর্নীতির কথা তুললে তারা আমাদের নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কিন্তু তারাও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এসব কারণে আমাদের কোর্স শেষ হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত আমরা মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়ছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক এফএম আলী হায়দার জানান, এখন পর্যন্ত যে সেমিস্টার ফি নেয়া হয়েছে, সেটা পড়ানো শেষ হয়েছে। তাদের পরীক্ষার বিষয়েও কাজ চলছে। তাছাড়া অর্থনৈতিক কোন দুর্নীতি হয় নি। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ব্যতীত অর্থ লেনদেন সম্ভব নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা ইনিস্টিউটের পরিচালনা পর্ষদের সাথে আলোচনা করেছি। আগামী রোববার পরীক্ষার ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নিবে।

জানা গেছে, বর্তমানে রাবি থেকে এই ইনস্টিটিউটের নবায়ন করা নেই। এর আগে গতবছর অক্টোবর মাসে ইনস্টিটিউটে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা ও দুর্নীতির সুষ্ঠু সমাধান চেয়ে অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ তোলেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের এই ইনস্টিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের ভাড়া বাড়িতে ক্লাস নেয়া হয়। পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। গবেষণার যন্ত্রপাতি ও ল্যাব নেই।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস বলেন, ইনিস্টিউটের অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছিল। ফলে এই পর্ষদ ইনস্টিটিউটের আর্থিক ও অ্যাকাডেমিকসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখবার দায়িত্বে ছিল। তবে সব কিছু পর্যালোচনা করে পর্ষদ দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে এবং এই পর্ষদ বিলুপ্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

আরবিসি/০২ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category