আরবিসি ডেস্ক : স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে থাকতে না চাইলে, তাকে জোর করে আটকে রাখা যাবে না। কারণ বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রী কখনও স্বামীর সম্পত্তি নয়।
বুধবার এই রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। তবে স্বামী চান একসঙ্গে থাকতে। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রী যাতে বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে পিছিয়ে না যায়, তাই আইনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। আদালত সেই আর্জি খারিজ করে জানান, নারীরা স্বামীর সম্পত্তি নয় যে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে স্বামীর সঙ্গেই থাকতে হবে।
এদিকে, স্ত্রীকে বৈবাহিক সম্পর্কে বাধ্য করার আর্জি জানিয়ে মামলাটি যিনি করেছিলেন, তাকে ভর্ৎসনা করে আদালত বলেছেন, ‘এমন রায় যে আদালত দিতে পারে, এ কথা মনে হল কী করে তার?’
জানা গেছে, ২০১৫ সালের একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দেওয়া হয়। তবে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ওঠার আগে উত্তরপ্রদেশের একটি পারিবারিক আদালত এবং এলাহাবাদ হাইকোর্ট ঘুরে এসেছে।
স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন স্ত্রী। তবে সমস্যা বাধে স্বামীর থেকে খোরপোশ (ভরণপোষণ) চাওয়ায়। নিজের জন্য আর্থিক সংস্থানে অপারগ ওই নারী স্বামীর কাছে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকার খোরপোশ দাবি করেন। তারপরই গোরক্ষপুরের এক আদালতে শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর আইনি লড়াই।২০১৯ সালে গোরক্ষপুরের সেই পারিবারিক আদালত স্বামীর পক্ষে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই পাল্টা এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা করেন স্ত্রী।
আদালতে ওই নারীর অভিযোগ, “পণের টাকা না দেওয়ায় তার ওপর নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী। তাই তিনি আর তার স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। তবে, যেহেতু তিনি নিজের আর্থিক সংস্থানে অপারগ, তাই স্বামীর কাছ থেকে খোরপোশ পাওয়ার অধিকার আছে তার।”
আদালতকে ওই নারী জানান, এ সবই আসলে তার স্বামীর অজুহাত। খোরপোশের টাকা দেবেন না বলেই তাকে নিজের সঙ্গে থাকতে বলছেন স্বামী।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট মামলাটিতে স্ত্রীর পক্ষে রায় দিলে এবার সুপ্রিম কোর্টে যান স্বামী। বুধবার সুপ্রিম কোর্টও স্ত্রীর পক্ষেই রায় দিলেন। স্বামীকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়কিষাণ কাউল এবং বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তর বেঞ্চ বলেন, “নারীরা কি সম্পত্তি নাকি? একজন নারী কি স্বামীর সম্পত্তি যে তিনি যেতে না চাইলেও তাকে জিনিসপত্রের মতো স্বামীর ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে?’ সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আরবিসি/০৪ মার্চ/ রোজি