• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৮ অপরাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ
রাবির ৬ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, ৩৩ জনের নানা মেয়াদে শাস্তি রাজপাড়া থানার নতুন ভবন উদ্বোধন করলেন আরএমপি পুলিশ কমিশনার উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক পাকিস্তানি চিনি, আলুসহ শিল্পের কাঁচামাল নিয়ে এলো সেই জাহাজ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন রাজশাহীর চারঘাটে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ সার সঙ্কটে রাজশাহীতে ব্যাহত হচ্ছে আলুচাষ, দামও অতিরিক্ত রাজশাহীতে ফের বাস ও সিএনজি চালকের সংঘর্ষ, দুই পক্ষের মীমাংসা স্থগিত কিডনি রোগীর চিকিৎসা আর আইফোন কিনতে ডাকাতির চেষ্টা: পুলিশ তনুর গ্রাফিতিতে পোস্টার সাঁটানো নিয়ে যা বললেন মেহজাবীন

পান্তা’র আদি ইতিহাস

Reporter Name / ৪৪১ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : মানুষ যেদিন থেকে রান্না করে ভাত খাওয়া শিখেছে, সেদিন থেকেই বাড়তি ভাত সংরক্ষণের জন্য তাতে পানি ঢেলে পান্তা করার প্রচলন শুরু হয়েছে। আর এই ভিজিয়ে রাখা ভাত নানা রূপে নানাভাবে খুঁজে পাওয়া যায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। যেখানে ভাত মানুষের প্রধান খাদ্য। আপাতদৃষ্টিতে এই অতি সাধারণ খাবারটি বেশির ভাগ দেশেই প্রান্তজনের খাবার।

ষোড়শ শতকের বিভিন্ন মঙ্গল কাব্যে সাধারণ মানুষের জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে ফিরে ফিরে এসেছে পান্তা। কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্যে, চৈত্রের প্রচণ্ড খরায়, অভাবে যখন পাথরবাটিও বাঁধা দিতে হয়, তখন মাটিতে আমানি খাবার গর্ত দেখিয়ে ফুল্লরা তার ১২ মাসের দুঃখের কাহিনী বলে। কখনো বা ব্যাধপত্নী নিদয়ার গর্ভবতী অবস্থার সব ছেড়ে পান্তা খাওয়ার কথা বলতে গিয়ে বলেন,
‘পাঁচ মাসে নিদায়ার না রোচে ওদন।
ছয় মাসে কাজী করঞ্জায় মন’।

১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে রচিত বিজয় গুপ্তের মঙ্গলকাব্যে পাই, ‘আনিয়া মানের পাত বাড়ি দিল পান্তা ভাত।’

১৭৫৬ সালের এপ্রিল মাস, নবাব আলিবর্দি খানের সদ্য মৃত্যুর পর তাঁর পৌত্র সিরাজদ্দৌলা জাঁকিয়ে বসেছেন মুর্শিদাবাদের দরবারে। প্রথম থেকেই সিরাজ ছিলেন ইউরোপ বিরোধী আর বাংলা তথা ভারতের বুকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাড়তে থাকা রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাবে বিরক্ত হয়ে মুর্শিদাবাদে বন্দি করেন হেস্টিংসসহ বেশ কিছু ব্যবসায়ীকে।

কিছু দিন নবাবের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করার পরে এক পূর্বপরিচিত বাঙালি ব্যবসায়ী কৃষ্ণকান্ত নন্দীর সাহায্যে, হেস্টিংস মুর্শিদাবাদ থেকে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন তার বাড়িতে। কান্তবাবু নামে পরিচিত কৃষ্ণকান্তের বাড়িতে হেস্টিংসের মতো সাহেবকে খেতে দেওয়ার মতো সেদিন কিছুই ছিল না।

কথিত আছে, বাংলার আইঢাই গরমে তিনি ক্ষুধার্ত ও ক্লান্ত হেস্টিংসকে কলাপাতায় পান্তা, ভাজা চিংড়ি এবং কাঁচা পেঁয়াজ খাইয়ে প্রাণরক্ষা করেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনস্মৃতিতে লিখেছেন, ‘ইসকুল থেকে ফিরে এলেই রবির জন্য থাকে নতুন বউঠানের আপন হাতের প্রসাদ। আর যে দিন চিংড়ি মাছের চচ্চড়ির সঙ্গে নতুন বউঠান নিজে মেখে মেখে দেয় পান্তাভাত, অল্প একটু লঙ্কার আভাস দিয়ে সে দিন আর কথা থাকে না’।

তৎকালীন শাসক শ্রেণি তাদের নিজেদের সুবিধার্থেই বাংলা বছরের শুরু করেছিল। তবে মুঘল শাসনামলে সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা মুক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করত, আগত দর্শক-শ্রোতারা তখন ঐতিহ্যবাহী পান্তাভাত খেত।

এরপর থেকেই বিংশ শতাব্দীর শেষে শহুরে বাঙালিরা বাংলা নববর্ষকে ঘটা করে উদযাপন শুরু করে। তবে তখনও পান্তার সঙ্গে ইলিশের যোগসূত্র হয়নি।

আরবিসি/১৪ এপ্রিল/মানিক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category