স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় নিমঘুটু গ্রামে দুই আদিবাসী কৃষক আত্মহত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে দুই পরিবার। কৃষি মন্ত্রনালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন তড়িঘড়ি করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
তারা বলেন, তদন্ত ও বিচার কাজ নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো ষড়যন্ত্র নয়, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তারা আত্মহত্যার পেছনে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। এসব দাবিতে ১১ এপ্রিল বিএমডিএ সদর দফতর ঘেরাও করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রাজশাহী নগরীর কাজীহাটাস্থ এনজিও ফোরাম কার্যালয়ে ‘রক্ষাগোলা সমন্বয়’ কমিটির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন মৃত কৃষক অভিনাথ মার্ডির স্ত্রী রোজিনা হেমব্রন ও রবি মার্ডির ভাই সুশীল মাডি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন গোদাগাড়ী রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সদস্য রঞ্জিত পাহাড়িয়া।
এই সময় রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির উপদেষ্টা প্রসেন এক্কা, সভাপতি সরল এক্কা, সিসিবিভিওর সমন্বয়কারী আরিফ হোসেন ও প্রশিক্ষণ সমন্বয়কারী নিরাবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএমডিএ’র নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াতের দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি করে তারা বলেন, গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের নামে দীর্ঘদিন ধরেই সেচের পানি প্রদানের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ থাকলেও তিনি সেগুলোর কোন তোয়াক্কায় করেন নি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় কৃষকের আত্মহননের পেছনে সাখাওয়াত হোসেনের মতো জাতিবিদ্বেষী ও দূর্নীতিবাজ নলকূপ অপারেটর যেমন দায়ী একইভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলের সেচ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থা বিএমডিএ’র ‘অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মও দায়ী।
সংবাদ সম্মেলনে থেকে আগামী ১১ এপ্রিল রাজশাহীতে বিএমডিএ অফিস ঘোরাও কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়। বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ ব্যবস্থার নামে যে শোষণযন্ত্র তৈরী করেছে তার দায় এড়াতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। তারা বলেন, এই অঞ্চলে ডীপ অপারেটরদের কাছে থেকে কৃষকদের জিম্মি দশা লাঘবে সুষ্ঠু তদারকি ও জবাবদিহিতার জায়গা তৈরী করা না গেলে ভবিষ্যতে আরো অভিনাথ বা রবি মার্ডিরা আত্মহননের পথ বেছে নেবে। এ অবস্থায় সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে আত্মহত্যায় প্ররোচণা মামলায় সাখাওয়াত হোসেনের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ কার্যক্রমের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নলকূপ পরিচালনার ক্ষেত্রে কৃষকবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করতে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে অপারেটর নিয়েগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের ও প্রাপ্তিক কৃষকদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গোটা বরেন্দ্র অঞ্চলের সেচের পানি গভীর নলকূপ অপারেটরদের কবজায়। যাদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে প্রায় ৪ লাখ কৃষক। নলকূপ অপারেটর নির্বাচনের ক্ষেত্রেও বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করেছেন। এসবের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়।
আরবিসি/০৯ এপ্রিল/ রোজি