• বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ
রাজশাহীর পদ্মার পাড় থেকে পুলিশের দুটি অস্ত্র উদ্ধার রাজশাহী এডিটরস ফোরাম নেতৃবৃন্দের সাথে বিভাগীয় কমিশনারের মতবিনিময় ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের রাজশাহীতে মাউশি’র পরিচালকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ হিসাব জমা দিতে হবে, মন্ত্রিপরিষদের নীতিমালা জারি পলিথিনের শপিং ব্যাগ উৎপাদনের বিরুদ্ধে ১ নভেম্বর থেকে অভিযান শুরু শিবিরের ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হবে বুধবার নাটোরে পাওনা ২০০ টাকা চাওয়ায় দোকানদারকে কুপিয়ে হত্যা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ রাজশাহীতে এক দফা দাবিতে নার্সদের কর্মবিরতি

দেশে ভয়ংকর পর্যায়ে যেতে পারে করোনা সংক্রমণ

Reporter Name / ৯৬ Time View
Update : শনিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : দেশে করোনা সংক্রমণের বর্তমান ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণের গতি যে হারে বাড়ছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ভয়ংকর অবস্থায় চলে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

চলতি বছর জানুয়ারি থেকে দেশে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকে। গত ১৪ দিনে সংক্রমণ চার হাজার ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৩৭০ জন যা শতকরা ২ দশমিক ৪ শতাংশ। ১৪ জানুয়ারি এই সংখ্যা এসে ৪ হাজার ৩৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমণের হার বেড়ে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ। সংক্রমণের এই গতি আগামী মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক দেশেই সংক্রমণের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশেও ওমিক্রন শনাক্তের পর থেকেই সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে চলেছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমণের হার ৭ গুণ হয়েছে। সংক্রমণের এই দ্রুত ঊর্ধ্বগতি আশঙ্কাজনক এবং অতি দ্রুতই পরিস্থিতি ভয়ংকর পর্যায়ে চলে যেতে পারে বলেও মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সংক্রমণের এ সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার পেছনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলাকেই বেশি দায়ী করছেন ওই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, গত কয়েক মাস ধরে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো তাগিদ নেই। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। ব্যক্তি পর্যায়ে কেউই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করছেন না, মাস্ক পড়া থেকে শুরু করে হাত ধোয়া কোনো কিছুই তোয়াক্কা করছেন না। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নির্বাচন চলছে। বাণিজ্য মেলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনসমাগম হচ্ছে। এসব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি ব্যাপকভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। এসব কারণে সংক্রমণের গতি দ্রুত বাড়ছে।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ইউরোপ, আমেরিকা, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বব্যাপীই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গুরুতর পরিস্থিতির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। এটি সব জায়গায় প্রচণ্ড ভাবে আঘাত করেছে। আমাদের দেশেও যে হারে বাড়া শুরু হয়েছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এটা ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যাবে। এর মূল কারণ হচ্ছে কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। শুধু তাই নয়, তোক্কাই করছে না। মাস্ক পরছে না, হাত ধোয়া তো ভুলেই গেছে। নির্বাচন হচ্ছে, বাণিজ্য মেলা, জনসমাগম হচ্ছে, দুরত্ব বজায় রাখার কোনো বিষয়ই নেই। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়ে যাবো আমরা। স্বাস্থ্যবিধিটা অবশ্যই মানতে হবে। যারা এখনও ভ্যাকসিন নেয়নি, সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে দ্রুত ভ্যাকসিন নিতে হবে।

এ বিষয়ে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী  বলেন, আমরা যেটা দেখছি সেটা হলো, করোনার গতি বাড়ার ক্ষেত্রে যতক্ষণ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা না যায় ততদিন সেটা বাড়তেই থাকে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা না হলে বাড়ার এ গতি অব্যাহত থাকবে। এভাবে চলতে থাকলে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট যে পর্যায়ে গিয়েছিল সেটাকে দ্রুত অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি যত উপেক্ষিত হবে সংক্রমণের গতি ততই বাড়তে থাকবে। করোনার গতিবিধি যেটা দেখা গেছে তা বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে চূড়ান্ত অবস্থানে চলে যায়। তারপর কিছু দিন স্থির থেকে কমতে থাকে। সেক্ষেত্রে মধ্য ফেব্রুয়ারির পর এই বাড়ার গতি হয় তো কমতে পারে। তবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হবে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, যত বাড়তে থাকবে ততই মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি দেখে বলা যায় সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে সেটা আরও দেড় থেকে দুই মাস চলতে পারে। এখন সংক্রমণ শুরুর দিকে, এটা অতীতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে সন্দেহ নেই। প্রতিদিন আক্রান্তের যে সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে সংক্রমণ তার থেকেও বেশি হতে পারে কারণ অনেকেই টেস্ট করাচ্ছেন না, গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যারা এখন ভ্যাকসিন নিতে পারেনি তাদের জন্য খারাপ হবে।

তিনি বলেন, দেশে এখনও অর্ধেকের বেশি মানুষ ভ্যাকসিন নেয়নি। দ্রুত সবাইকে ভ্যাকসিন নিতে হবে। করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন কম গুরুতর এটা বলা যাবে না। এটা ডেল্টার চেয়ে বেশি ছড়াচ্ছে, অনেক দেশে আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের এখন করোনা টেস্ট ফ্রি করে দেওয়া উচিত। পাশাপাশি পাড়া মহল্লায় গিয়ে টেস্ট করানোর ব্যবস্থা করা উচিত। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

আরবিসি/১৫ জানুয়ারি/রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category