• শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

ভারতে ওমিক্রনে প্রথম মৃত্যু

Reporter Name / ৭৬ Time View
Update : বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো করোনাভাইরাসের অতি-সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে ভারতে প্রথম একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। বুধবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানে ওমিক্রনে প্রথম একজন রোগী মারা গেছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, ভারতে ওমিক্রনে প্রথম এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে রাজস্থানে। লক্ষ্মীনারায়ণ নাগর (৭৩) নামের ওই ব্যক্তি রাজ্যের উদয়পুরের বাসিন্দা। গত ১৫ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছিল। তখন থেকেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। উদয়পুরের এই বাসিন্দার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ দীর্ঘমেয়াদী নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা ছিল।

পাঁচদিন পর গত ২১ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসে। পরে তার নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। ২৫ ডিসেম্বর জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফলে তার ওমিক্রন শনাক্ত হয়। এর ছয়দিন পর গত ৩১ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে মারা যান তিনি।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্মীনারায়ণ নাগর টিকার দুই ডোজ নিয়েছিলেন। এছাড়া তার বিদেশ ভ্রমণ, এমনকি বাইরের লোকজনের সংস্পর্শে যাওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না।

শারীরিক অন্যান্য জটিলতার কারণে ওই ব্যক্তিকে টানা হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ওই ব্যক্তির মৃত্যু ওমিক্রনে মৃত্যু হিসাবে গণনা করা হবে। রাজস্থানের রাজ্য সরকারও লক্ষ্মীনারায়ণ ওমিক্রনে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে।

বুধবার পর্যন্ত ভারতে ২ হাজার ১৩৫ জনের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ওমিক্রন রোগী পাওয়া গেছে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে। সেখানে ৬৫৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওমিক্রন রোগী (৪৬৪ জন) পাওয়া গেছে রাজধানী দিল্লিতে।

অতি-সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এখন পর্যন্ত দেশটির ২৩ রাজ্য এবং ভূখণ্ডে ছড়িয়েছে। এদিকে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৫৮ হাজার ৯৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে; যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৫৫ শতাংশ বেশি। মঙ্গলবার দেশটিতে ৩৭ হাজার ৩৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গত ২৮ ডিসেম্বর ভারতে ৯ হাজারের মতো করোনা রোগী শনাক্ত হয়। কিন্তু মাত্র ৯ দিনের মধ্যে রোগী শনাক্তের এই হার প্রায় ছয়গুণ বেড়েছে। বুধবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়েছে, ভারতে সাপ্তাহিক করোনা পজিটিভের হার ২ দশমিক ৬০ শতাংশ। তবে দৈনিক সংক্রমণের হার ৪ দশমিক ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে এই ভাইরাসে মারা গেছেন অন্তত ৫৩৪ জন।

ভারতে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে। এই রাজ্যে ৬৭ লাখ ৩০ হাজার ৪৯৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৭৩ জন। করোনাভাইরাসের অতি-সংক্রামক ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব ক্রমান্বয়ে বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার এই জনবহুল দেশে।

মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৮ জন। মহামারিতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ৪ লাখ ৮২ হাজার ৫৫১ জন।

করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি হওয়া ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে রাত্রিকালীন কারফিউয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই মহামারি মোকাবিলায় দেশটিতে এখন পর্যন্ত টিকার ১৪৭ কোটি ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে দেশটির ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের করোনা টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।

আরবিসি/০৫ জানুয়ারি/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category