বেঁচে যাওয়া একজন সেনা জানিয়েছেন, আক্রমণটি তিন ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলেছিল।
স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী বোকো হারাম ও পশ্চিম আফ্রিকা প্রদেশে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সহযোগী আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধারা বোর্নো রাজ্য থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।অতীতে বিভিন্ন সময়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক লোকজনের ওপর এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা হামলা চালিয়েছেন। আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধাদের হামলায় শত শত মানুষ নিহত ও আরো হাজার হাজার মানুষ বাস্ত্যুচুত হয়েছেন।
আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধারা ট্রাকে করে এসে বোর্নো রাজ্যের ম্যালাম-ফাতোরি শহরে সেনাবাহিনীর ১৪৯ ব্যাটালিয়নে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালান।
দুই সেনাও সেখানকার বাসিন্দারা বলেছেন, নাইজার সীমান্তের প্রবেশদ্বারের এই ঘাঁটিতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের পাশাপাশি বন্দুক থেকে গুলিও চালিয়েছেন আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধারা।হামলায় বেঁচে যাওয়া একজন সেনা টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, জঙ্গিরা সর্বত্র বুলেট বর্ষণ করেছে। ঘাঁটিতে অবস্থানরত সেনারা আকস্মিক এই হামলার ঘটনায় বিস্মিত হয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সেনা বলেন, তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার অনুমতি পাননি।
আমরা আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি এবং তিন ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বন্দুকযুদ্ধের পর তারা আমাদের পরাজিত করে। আমাদের কমান্ডিং অফিসার, একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলকে তারা হত্যা করেছে।’তিনি বলেন, ‘২০ জন সেনা নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’ শহর ছেড়ে আসা বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার রাত পর্যন্ত মালাম-ফাতোরিতে কিছু আক্রমণকারীকে দেখা গেছে।
সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য নিয়োগ করা স্থানীয় মিলিশিয়ার সদস্য মালাকাকা বুকার বলেছেন, যোদ্ধারা ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে কিছু বাসিন্দা শহর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
আইএসডব্লিউএপির ২০১৬ সালে মূলধারার বোকো হারাম থেকে আলাদা হয়ে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ার প্রভাবশালী সশস্ত্র দলে পরিণত হয়। যদিও বছরের পর বছর ধরে সামরিক আক্রমণ এবং অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বোকো হারাম এবং আইএসডব্লিউএপির বছরের শুরু থেকে বোর্নোতে আক্রমণ বাড়িয়েছে। ধারাবাহিক অভিযানে বেশ কয়েকজন কৃষক এবং জেলে নিহত হয়েছে।
১৫ বছর ধরে চলা এই সংঘাতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং উত্তর-পূর্বে প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সহিংসতা প্রতিবেশি দেশ নাইজার, চাদ এবং ক্যামেরুনেও ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি আঞ্চলিক বাহিনী তৈরি হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা।