• বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৫ অপরাহ্ন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যেতে ট্রাম্পের সই

Reporter Name / ৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫

আরবিসি ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের আদেশে সই করেছেন সদ্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্বগ্রহণ করা ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনা মহামারি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভুলভাবে পরিচালিত হওয়ার অভিযোগে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল রোটুন্ডায় শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ট্রাম্প অন্যান্য আদেশের সঙ্গে ডব্লিউএইচওর সিদ্ধান্তপত্রেও সই করেন। দ্য গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

এই পদক্ষেপের অর্থ হলো, ১২ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা ত্যাগ করবে এবং এর কাজে সকল আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দেবে। যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ডব্লিউএইচও’র সবচেয়ে বড় আর্থিক সহায়তাকারী, যা তাদের সামগ্রিক তহবিলের প্রায় ১৮% অবদান রাখে। ডব্লিউএইচওর ২০২৪-২০২৫ সালের জন্য সাম্প্রতিক দুই বছরের মার্কিন বাজেট ছিল ৬.৮ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন। যেখানে পর্যালোচনামূলকভাবে ৯০ দিনের জন্য অন্যান্য বিদেশি উন্নয়ন সহায়তাও বন্ধ রাখা হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আদেশের পত্রে সই করার সময় বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাবে। কারণ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ মহামারি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংকট ভুলভাবে পরিচালনা করেছে।

ট্রাম্প বলেছেন, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অনুপযুক্ত রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে ডব্লিউএইচও। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সংস্থাটি অন্যায়ভাবে বেশি টাকা নিয়েছে। অন্যান্য বৃহত্তর দেশ যেমন চীনের প্রদত্ত অর্থের তুলনায় যা অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য আমাদের ঠকিয়েছে। সবাই যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকিয়েছে। এটি আর ঘটবে না।’ এসব কথা বলতে বলতেই আদেশে সই করেন ট্রাম্প।

প্রসঙ্গত, ১৮৯০ সালের পর ট্রাম্পই প্রথম ব্যক্তি যিনি একটি নির্বাচনে পরাজয়ের পর আবারও প্রেসিডেন্ট হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ গ্রহণ করেছেন। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল রোটুন্ডায় তার শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে হাজির ছিলেন বিদেশি বিভিন্ন রাষ্ট্র নেতারাও।

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশ এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প, ছোট ছেলে ব্যারন ট্রাম্প, টিফানি ট্রাম্প, লারা ট্রাম্প, এরিক ট্রাম্প, জ্যারেড কুশনার, ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র।

এ ছাড়া ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই, স্পেসএক্স ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক, গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ, আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসসহ বিশ্বের বহু প্রভাবশালী শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

দায়িত্বগ্রহণের পর সারা বিশ্বের নজর ট্রাম্পের দিকে। তিনি একের পর এক নতুন আদেশে সই করছেন। তার দপ্তর কিছুক্ষণ পরপর তা ঘোষণা দিচ্ছে। সেসব নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণে ব্যস্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

এদিকে ডব্লিউএইচওর পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেওয়ার আদেশে সই করেছেন। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আবারও প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বাইরে চলে গেল, যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্বন নিঃসরণকারী দেশটির জন্য একটি বড় সিদ্ধান্ত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category