নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তারা নগরের তালাইমারী মোড় অবরোধ করে রাখেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা রুয়েটের সামনের সড়ক দিয়ে জরুরী ছাড়া কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেয় নি। ফলে অসংখ্য মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়েন। পরে দুপুরে শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে।
দাবিগুলো হলো, হামলাকারিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং হারানো মালামাল জব্দের ব্যবস্থা করা, রাজশাহীর আবাসিক এলাকাগুলো অস্ত্র, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করা, অস্ট্রয় মোড়, মোন্নাফের মোড়সহ রুয়েটের আশপাশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, রুয়েটের আশেপাশের এলাকাগুলো চুরি, ছিনতাই মুক্ত করা এবং তালাইমারী মোড়ে পুলিশ বক্স চালু করা।
এ সময় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে আসামিদের বিচারের মুখোমুখি করাসহ দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর নগরের পদ্মা আবাসিক এলাকার হজের মোড়ে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি দফায় দফায় রুয়েটের ছাত্রদের উপর হামলা চালান। এতে রুয়েটের ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন। এছাড়া রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপ-পরিচালক সহযোগী অধ্যাপত ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনও আহত হন। এ নিয়ে পরদিন বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় চন্দ্রিমা থানায় রুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় রুয়েট।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আসামিদের শাস্তির আওতায় না এনে জামিন দেয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এই হামালার ঘটনায় আসামিদের শাস্তির আওতায় না আনা হলে পরবর্তীতে কোন অপ্রিতীকর ঘটনা ঘটলে তার দায় পুলিশ-প্রশাসনের।
‘এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা খবর পান মামলার অন্য চার আসামিও আদালতে হাজির হয়ে জামিন পেয়েছেন। এতেই শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।’
রুয়েটের ছাত্র-কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আসামিরা সবাই জামিন পেয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছিল। তারা সড়ক অবরোধ করে। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার অভিযোগপত্র দিয়ে আসামিদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। এ আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।’#