• বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙাড়ির দোকানে বিক্রি!

Rozina Sultana Rozy / ৬১ Time View
Update : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : একজন অস্ত্র উঁচিয়ে বিজয়োল্লাস করছেন। আরেকজন এক হাতে অস্ত্র, অন্য হাতে পায়রা উড়িয়ে দিচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের এমন থিমে তৈরি করা একটি ভাস্কর্যের ঠাঁই হয়েছে ভাঙারির দোকানে। ভাস্কর্যটি বানিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প এবং শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল মোমেনিন জোসি। ভাস্কর্যটি তিনি কোথাও স্থাপনের জন্য বিক্রি করতে না পেরে অবশেষে ভাঙারির দোকানে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে।

রাজশাহী নগরীর বিনোদপুর বাজারের ভাঙারি ব্যবসায়ী আমিরুল মোমেনিনের ভাস্কর্যটি কিনে এনেছেন। এটি তিনি না ভেঙে তার ‘খোকন আয়রন ঘর’ নামে দোকানের সামনে রেখেছেন। তিনি মূলত ক্রেতার অপেক্ষায় আছেন। কেউ যদি এটি না কেনেন তাহলে ভাস্কর্যটি তিনি ভেঙে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।
ভাঙারি ব্যবসায়ী খোকন বলেন, মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্যের ভেতরে লোহার বিম দিয়ে জালি করা। আর বাইরের অংশটা এসএস পাইপ এবং স্টিল দিয়ে তৈরি। এর উচ্চতা প্রায় ১৮ ফুট। তিনি দুই লাখ টাকায় ভাস্কর্যটি বিক্রি করবেন।

ভাস্কর আমিরুল মোমেনিন জোসি জানান, মাত্র ৯ হাজার ৪০০ টাকায় ভাস্কর্যটি বিক্রি করেছেন তিনি। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। নগরীর মেহেরচণ্ডিতে লম্বা সময় ধরে নিজের স্টুডিওতেই ভাস্কর্যটি তৈরি করেন তিনি। কোথাও স্থাপন করতে না পেরে ভাঙারির দোকানে তা বিক্রি করেছেন।

আক্ষেপ করে তিনি জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্যটি কোথাও বিক্রি করা সম্ভব না। এটি এখন নিছকই ‘মূর্তি’। তাই ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দিয়েছি। এটা একজন শিল্পীর জন্য কতটা কষ্টের তা বলে বোঝানো যাবে না। ওই ব্যবসায়ীকে বলেছিলাম- ভেঙে লোহা হিসেবে যেন তিনি এটি নিয়ে যান। কিন্তু তিনি অক্ষত অবস্থায় নিয়ে গিয়ে দোকানের সামনে ফেলে রেখেছেন। আমার কাছে ফোন আসছে, কষ্টটাও বাড়ছে।

তিনি জানান, ভাস্কর্যটি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় দোকানিও এটি নিয়ে বিপদে পড়েছেন। তিনি এটা ফেরত দিতে পারেন। যদি ফেরত দেন, তাহলে কেউ যদি কোথাও এটি স্থাপন করতে চান, তাহলে অধ্যাপক সেটি করে দেবেন। প্রতিস্থাপনের আগে এই ভাস্কর্যের আরও কিছু কাজ করা প্রয়োজন, সেটিও তিনি করে দেবেন বলে জানান।

প্রসঙ্গত, শিল্পী আমিরুল মোমেনিন জোসির করা সাঁওতাল মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য ২০১১ সালের দিকে দিনাজপুরের পাঁচবিবিতে স্থাপন করা হয়। রাজশাহী কলেজের শহীদ মিনারের পেছনে আছে তার করা একটি ম্যুরাল। ভাষা-আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের থিমে এই ম্যুরালটি করা হয়। এছাড়া রাজশাহী কলেজেই আরেকটি অ্যাম্বুস আছে তার। রাজশাহীর ইতিহাস নিয়ে সেই অ্যাম্বুসটি করা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category