নিজস্ব প্রতিবেদক : নিবন্ধন না পাওয়া রাজশাহীর বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের ৪২ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাই এসব শিক্ষার্থীরা অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যেতে ছাড়পত্র চেয়েছিলেন। এ জন্য প্রধান ফটক বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শাহমখদুম মেডিক্যাল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, “শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধামত ভিডিও দেখাচ্ছে। তারা যেগুলো করেছেন তার ভিডিও দেখাচ্ছেন না। ফলে আমরাই অপরাধী হয়ে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা ভুক্তভোগী হয়েছি, এখনো হচ্ছি।”
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে হাওয়া হামলার ঘটনায় কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই জন চিকিৎসা নিয়েছেন রাজশাহী মেডিক্যল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। আহত এক শিক্ষার্থী কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করতে নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া দুই শিক্ষার্থী হলেন- ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন্না ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাইমন ইকবাল নিরব।
এই দুই শিক্ষাবর্ষের ৪২ জন এমবিবিএস শিক্ষার্থী ভর্তির পর থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) ও বিএমডিসির নিবন্ধন পাচ্ছেন না। প্রতারণা করে তাদের ভর্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ২৩টি মামলা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শাহ মখদুম মেডিক্যাল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন, তার ভাই টিটু ও মিঠুসহ ভাড়াটে লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছেন।
আহত শিক্ষার্থী সোহেলুল হক বলেন, “আমরা গিয়ে বলেছিলাম আমাদের জীবনটা বাঁচান স্যার। তিন বছরেও আপনি কিছু করতে পারেননি। আমরা এনওসি এনেছি। আপনি সাইন করে দেন। এনওসিতে লেখা ছিল, ‘আমরা যেহেতু ওদের নিবন্ধনের ব্যবস্থা করতে পারছি না। অন্য কোথাও পড়াশোনা করলে আমাদের আপত্তি নেই।’ এই এনওসিতে তিনি সাইন করলেন না। দুটি গেট বন্ধ করে এলোপাথাড়ি মারা হলো। মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকেও মেরেছে।”
মেহেদী হাসান মুন্না নামে অপর শিক্ষার্থী বলেন, “পত্রিকায় চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে তারা এ প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি হন। এমবিবিএস প্রফেশানাল কোর্সে ভর্তির জন্য কেউ দিয়েছেন ১৫ লাখ, কেউ দিয়েছেন ১৮ লাখ টাকা। এরপর নিবন্ধন না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ২৩টি মামলা করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলা করার পর ছাড়পত্র চাওয়ায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় তারা মামলা করছেন।”
নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, “কলেজে ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে সেটা বিস্তারিত জানি না। মারধরের অভিযোগে কলেজের এক শিক্ষার্থী থানায় এজাহার দিয়েছেন। সেটা মামলা হিসেবে রেকর্ড করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”