নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবহন শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাজশাহীর পরিবহন শ্রমিকেরা নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণির মানুষ।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকে এই রুটে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই রুটে কোনো বাস চলেনি। এমনকি ঢাকার কোন বাসগুলোকেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
যাত্রীরা বলছেন, প্রতিদিন রাজশাহী যেতে আমাদের এই রুটের বাসগুলোর ওপরই নির্ভর করতে হয়। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এখন বিকল্প পথে যেতে হচ্ছে, যা সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল।
তারা জানান, এ অবস্থায় তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং দ্রুত বাস চলাচল স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে শ্রমিকরা টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। রাজশাহীর শ্রমিকদের অভিযোগ, সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে আল-মাহি পরিবহনের চালক সাঈদ হাসান চাঁপাইনবাবগঞ্জে শ্রমিকদের হাতে মারধরের শিকার হন। এরপর তিনি ফিরে এসে ঘটনার কথা জানান।
সাঈদ হাসান বলেন, শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে রাজশাহীর বাস শ্রমিকদের মারধর করা হলে, রোববার (২৭ অক্টোবর) বিষয়টি মীমাংসার জন্য দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকরা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এমন ঘটনা আর ঘটবে না এবং রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে স্বাভাবিকভাবে বাস চলাচল করবে। তবে আজ সকালে আমি ও আমার সহকর্মীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জে গেলে তারা মারধর করে। এছাড়া, আল নাহিদ পরিবহনের চালকসহ তিনজনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মারধর করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ রাখেন।
শ্রমিক ধর্মঘটে গৌড় স্পেশাল ও মহানন্দাসহ রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের সব বাস বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি রাজশাহীর ওপর দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী ঢাকা রুটের বাসও চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি জানিয়েছেন, সমস্যা সমাধানের জন্য রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৈঠক হলেও সমঝোতা ছাড়াই তা শেষ হয়। এখন সমস্যা সমাধানে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
রাজশাহীর শ্রমিকদের দাবি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম আনারই বিষয়টি জটিল করছেন এবং তার ইন্ধনেই রাজশাহীর শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে।
তবে আনোয়ারুল ইসলাম আনার বলছেন, দুই পক্ষের শ্রমিকই উত্তেজিত হয়ে একে অপরকে মারধর করেন, যার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এমন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সবাই মিলে বসে এ সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে এবং সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।