আরবিসি ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিএনপিসহ দেশের সব রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র, জনগণ আপনাদের প্রতি সমর্থন আছে সেই সমর্থনকে অবজ্ঞা করবেন না।
তিনি বলেন, যা সংস্কার করার দরকার করেন। সংস্কার করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করুন।
সোমবার (২১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) উদ্যোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো এবং ছাত্র-জনতা হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, বাজারের অবস্থা ভালো না। সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেড়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও তেমন ভালো না। অথচ এই সরকারের প্রথম কাজ ছিল এসব নিয়ন্ত্রণ করা এবং নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া। সেই উদ্যোগ, সেই কাজ আমরা লক্ষ্য করছি না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নানান দিক থেকে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। আপনারা সংস্কার করুন। তবে বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল আপনাদের সমর্থন করছে। আপনাদের প্রতি দেশবাসীর সমর্থন আছে। আপনাদের প্রতি ছাত্রদের সমর্থন আছে। এই সমর্থনকে অকার্যকর করবেন না। অবজ্ঞা করবেন না।
বাংলাদেশের জনগণের সেন্টিমেন্ট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিক কৃষক জনতা যদি না বাঁচে তাহলে সরকার থাকা আর না থাকা সমান কথা। সেজন্য যারা দেশের সাধারণ জনগণ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
দুদু বলেন, যাদের হাতে বাংলাদেশ পড়েছিল, শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের হাতে। আমরা চোর উৎপাদনের হাতে পড়েছিলাম। শেখ মুজিব জীবিত থাকা অবস্থায় তার ছেলে ব্যাংক ডাকাত হিসেবে ঘোষিত হয়েছিল। অপশাসনের কি ভয়ঙ্কর পরিণতি তা আমরা দেখেছি। তার দুটি কন্যা ছিল তারা এত বড় লুটেরা, খুনি যে ইতিহাসের ভয়ঙ্কর অধ্যায় হিসেবে থাকবে। তারা লুকিয়ে থেকে পালিয়ে গিয়ে রাজনীতির কথা বলে তখন আমার মনে প্রশ্ন থাকে রাজনীতির অর্থটা কী।
তিনি বলেন, এদেশের ছাত্র, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ গত তিনটা নির্বাচনে ভোট দিতে পারে নাই। ভোট দেওয়ার আশায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের আশায় ফ্যাসিবাদ হাসিনাকে বিদায় করেছে তারা। তাই কবে কোন দিন নির্বাচন দেবেন দিন তারিখ ঠিক করে কাজ শুরু করেন। তাহলে একটা ফলাফল পাওয়া যাবে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তার জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। ১৯৭১ সালে জাতীয় বীর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। তখন বেগম খালেদা জিয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কারাগারে ছিলেন। আর যারা স্বাধীনতার কাণ্ডারি দাবি করে তারা হয় পাকিস্তানের জেলে ছিল আর বাকিরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আরাম আয়েশে ছিল। আর বেগম খালেদা জিয়া তার দুটি মাসুম বাচ্চা নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জেলে ছিলেন। আজ পর্যন্ত তিনি শত শত মামলা মাথায় নিয়ে আছেন। কিসের জন্য? দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষার জন্য। এই মানুষটা তার পুরো জীবনটা বিলিয়ে দিয়েছেন দেশের স্বাধীনতা গণতন্ত্র জন্য।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে জাগপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন শিল্পীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এনডিপির মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হারুন সোহেল।