নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দুই হাতে গুলি চালিয়ে আলোচনায় আসা যুবলীগ কর্মী জহিরুল হক ওরফে রুবেলকে (৪১) আরেকটি হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ -এর বিচারক মো. ফয়সল তারেক এই আদেশ দেন।
পুলিশ রুবেলকে রাজশাহীর বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল। এর আগে রাজশাহী মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান হত্যা মামলায় একই আদালত ১৫ সেপ্টেম্বর রুবেলের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জহিরুলকে আদালতে আনা হয়। আদালত থেকে বের করার সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরে ডিম, ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ শুরু করেন। এ সময় ভিডিও ধারণ করতে গেলে দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়। তাঁদের দুইজনের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলাও হয়েছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রুবেলকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে আটক করে র্যাবের একটি দল। পরদিন রাজশাহীতে এনে রোববার তাকে আদালতে তোলে পুলিশ। রাজশাহী নগরের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা রুবেল যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি গেল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, রুবেলকে আরও একটি মামলায় পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দুপুরে ছাত্র-জনতা নগরের তালাইমারী মোড় থেকে মিছিল নিয়ে নগরের সাহেববাজারের দিকে যেতে থাকেন। এই খবরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা কল্পনার মোড়ে ছাত্র-জনতাকে আটকানোর চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ছাত্র-জনতার উপর গুলি করা হয়।
এতে ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম ঘটনাস্থলেই মারা যান। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলী রায়হান ৮ আগস্ট রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ দুটি হত্যা মামলার পাশাপাশি আরও দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে রুবেলকে।