স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাজা নামাজ শেষে দাফন কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে নিজ গ্রাম বাঘা পৌরসভার গাওপাড়া গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে পিতার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। জানাজা নামাজের আগে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমকে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, বাবুল হত্যার বিষয়ে গোপনে যারা মদদ দিয়েছেন তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে বিচার করা হবে।
এ সময় তিনি কয়েকজন কেন্ত্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নাম উল্লেখ করে তারা কেন জানাজায় আসে নি জানতে চান। তিনি বলেন, তাদের সৎ সাহস নেই। প্রয়োজনে তাদের নামে মামলা করে আইনের কাঠ গড়ায় দাঁড় করানো হবে।
শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, প্রকাশ্যে কিংবা পেছন থেকে কেউ মদদ দিয়ে থাকলে তারা এই জানাজা থেকে চলে যান।
এরপরেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকারকে চলে যেতে বলা হয়। শাহরিয়ার বক্তব্য শেষ করার পর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আবদুস সামাদ তাকে চলে যেতে বলেন।
এ বিষয়ে অনিল কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে মরহুম বাবুলকে শেষ শ্রদ্ধা ও পরিবারকে সমবেদনা জানাতে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে কিছু বুঝে উঠার আগেই পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ আমাকে জানাজার মাঠ থেকে চলে যেতে বলে। তারপর সেখান থেকে চলে আমি এসেছি।
এ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দূর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টুসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২২ জুন) সকাল ১০টার দিকে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের ডাকে উপজেলা পরিষদের সামনে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
অপরদিকে একইদিনে উপজেলা সচেতন নাগরিগের ব্যানারে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির জমি রেজিষ্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে লায়েব-আক্কাছ সমর্থিতরা। উপজেলা পরিষদেও সামনে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাঁধে। উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এসময় উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুত্বর আহত হয়। এতে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা অবনতি হলে নিবিড় পরিচর্ছা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) নেওয়া হয়।
সেখানে ৪ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২৬ জুন) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মৃত্যু হয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম বাবুল (৫৫) বাঘা পৌর এলাকার গাওপাড়া গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলাম আমুর ছেলে। তার বাবা ৬ মাস আগে মারা গেছেন। আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাজার নামাজ পড়ান অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল গফুর মিঞা।
আরবিসি/২৭ জুন’২৪/ রোজি