আরবিসি ডেস্ক : স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে মোবাইল টাওয়ারের ১২০ ফুট উঁচুতে উঠে বসেন এক যুবক। রাগে সেখানেই থাকেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কিন্তু তা-ও নামিয়ে আনা যায়নি তাকে। শেষ পর্যন্ত খবর দিতে হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।
এর প্রায় সাত ঘণ্টা পর রাত ২টা নাগাদ ২৮ বছর বয়সের ওই যুবককে বুঝিয়ে টাওয়ার থেকে নিচে নামাতে সক্ষম হন পুলিশ ও দমকলের কর্মীরা। গতকাল শনিবার বিকেলে ভারতের বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের পাত্রগাতি গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় ক্ষেতমজুর সীমন্ত মাঝি মাঝেমধ্যেই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফেরেন। তার স্ত্রী মিঠু মাঝি প্রতিবাদ করলেই তাদের মধ্যে শুরু হয় ঝগড়া। তবে শনিবার সীমন্তের সঙ্গে মিঠুর ঝগড়ার কারণ ছিল অন্য। মিঠু জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে স্বামী বাড়ি ফেরার সময় মিঠু গ্রামে এক সাপুড়ের কাছে সাপ খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। সাপুড়ে তাকে বিভিন্ন দোষ কাটাতে কবচ-মাদুলি পরার পরামর্শ দেন।
কবচ-মাদুলির প্রতি স্ত্রীর আগ্রহের কথা জানতে পেরে ঝগড়া শুরু করেন সীমন্ত। তিনি সাপুড়েকেও গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। এমনকি তা নিয়ে গ্রামের একাংশের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়েও পড়েন ওই যুবক।
মিঠুর দাবি, এর পরেই সীমন্ত ছুটে গিয়ে গ্রামের এক প্রান্তে থাকা ১২০ ফুট উঁচু একটি মোবাইল টাওয়ারের উপর উঠতে শুরু করেন। গ্রামবাসীরা সীমন্তকে বারবার নেমে আসতে বললেও তিনি ক্রমশ টাওয়ারের চূড়ায় উঠে যান। শেষ অবধি টাওয়ারের প্রায় ১২০ ফুট উচ্চতায় থাকা ল্যান্ডিংয়ে গিয়ে থামেন তিনি।
সীমন্তের এমন কাণ্ড দেখে বিপদের আশঙ্কায় দমকলে খবর দেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ইন্দাস থানার পুলিশও। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দমকল ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমন্তকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবশেষে ওই যুবক টাওয়ার থেকে নেমে আসেন।
এ ব্যাপারে মোবাইল টাওয়ার সংস্থার আধিকারিক পীযূষ কুমার মণ্ডল বলেন, ‘টাওয়ারের নিচের অংশ ব্যারিকেড করে ঘেরা রয়েছে। ব্যারিকেডের দরজাতেও তালা লাগানো ছিল। কিন্তু ওই যুবক ব্যারিকেড টপকে ভেতরে ঢুকে এমন কাণ্ড করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
এদিকে গভীর রাতে ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পর পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন প্রশাসনের কর্তারা। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই যুবকের পরিবারসহ এলাকার মানুষজন।
আরবিসি / ১৮ ফেব্রুয়ারী / অর্চনা