নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় উচ্চ আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে পুকুর খননের হিড়িক চলছে। ধ্বংস হচ্ছে শত শত একর কৃষি জমি।
মহামান্য হাইকোর্টে রিটের প্রেক্ষিতে বাগমারা উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খননে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিন রাতে চলছে পুকুর খননের মহাযজ্ঞ।
প্রভাবশালীদের খুঁটিরজোর ও রাজনৈতিক ছত্রাছায়ায় তিন ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খনন। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাগমারা উপজেলা প্রশাসন চোখে ঠুলি পরে ঘুমিয়ে আছে। এমনও অভিযোগ আছে, গোপন তথ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপে প্রেরণ করলে সাথে সাথে পুকুর খননকারীদের নিকট পৌঁছে যায়। এ কাজ উপজেলা প্রশাসনের এক ধরনের অসৎ কর্মচারী-কর্মকর্তারা করে থাকেন।
ফলে দিন দিন কমছে ফসলি কৃষি জমি। কৃষকরা হচ্ছে সর্বশান্ত। কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করার জন্য সরকারের বিভিন্ন আদেশ ও ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন এবং উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা বাস্তবায়নে যথারীতি পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক নিসক্রিয়তা সর্ব সাধারণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । তাই বাধাহীনভাবে অবিরাম গতিতে চলছে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার হুদির বিলে (খননকারী শিবেন), গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে সাজুড়িয়ার যশোর বিলে (খননকারী কার্তিক), হামিরকুৎসা ইউনিয়নে খাপুর বিলে, মাড়িয়া ইউনিয়নের মহিষের বিল এবং ঝিকরা ও গনিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে প্রভাবশালীরা অন্তত ৩০টি পুকুর খনন করছে।
পাশাপাশি পুকুর খননের মাটি কাঁকড়া দিয়ে বিভিন্ন ইট ভাটায় উচ্চ দামে বিক্রি চলছে। ফলে অতিরিক্ত মাটি বোঝাই ট্রাক্টর ব্যবহারের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। এছাড়াও রাস্তাঘাটে অতিরিক্ত ধুলো-বালি ও সামান্য বৃষ্টিপাতে পিচ্ছিল কাদায় মানুষের জনজীবন নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে ।
স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে । স্থানীয় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন যে, সরিষার মধ্যে ভূত। রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে প্রতিকার পাবো কী ভাবে ? তাই এই এলাকার সর্বসাধারণ আবাদি কৃষি জমি ও এলাকার রাস্তাঘাট রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন জানান, পুকুর খনন বন্ধের জন্য আমাদের উপজেলা প্রশাসনের অভিযান চলমান রয়েছে। খুব দ্রুত এসব পুকুর খননের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরবিসি / ১৩ ফেব্রুয়ারী / অর্চনা