আরবিসি ডেস্ক : জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে কাইল ওয়াকারকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী অ্যানি কিলনার। গত ১০ জানুয়ারি এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে ১৪ বছরের সম্পর্কের ইতি টানার খবর দিয়েছিলেন অ্যানি।
এর পেছনে ওয়াকারের দীর্ঘদিনের বান্ধবী লরিন গুডম্যানের সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ককেই কারণ হিসেবে বলছিল সংবাদমাধ্যম। ডেইলি সানের কাছে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ম্যানচেস্টার সিটি রাইটব্যাক তা স্বীকার করেছেন।
নিজের ‘সোলমেট’ এবং কাছের সবচেয়ে বন্ধু অ্যানিকে এতবড় দাগা দিয়েছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ওয়াকার। এবং বলেছেন লরিনের সঙ্গে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেওয়াটাই তাঁর বিয়েটা ভেঙে দিয়েছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাছের মানুষদের সম্মুখে বিয়ে করেছিলেন ওয়াকার ও অ্যানি কিলনার। তবে দুজনের সম্পর্কের শুরু ২০০৯ সালে। দুজনের রিয়ান, রোমান ও রেইন নামের তিন সন্তান আছে। এমনকি আগামী মার্চেই এই দম্পতির চতুর্থ সন্তানের জন্ম হবে। তবু ওয়াকারকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে খুব বেশি ভাবতে হয়নি তাঁকে।
কাইল স্বীকার করেছেন লরিনের সঙ্গে তাঁর জানাশোনা বছর দশেকের বেশি সময় ধরে। লরিন বারবার দাবি করেছেন, ওয়াকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে। কিন্তু ওয়াকার তা অস্বীকার করেছেন সবসময়। কিন্তু ২০২০ সালের এপ্রিলে একটি ছেলের জন্ম দেন লরিন, এবং জানান বাচ্চার বাবা কাইল ওয়াকার।
ওয়াকারের এখনো মনে আছে সে খবরটা সে সময়কার বান্ধবী ও জীবনসঙ্গী অ্যানিকে কীভাবে দিয়েছিলেন। খবরটি ভাইরাল হওয়ার আগেই অ্যানিকে জানাতে চেয়েছিলেন। তাই অনুশীলন থেকে ফোন করে বলেছিলেন, ‘তোমাকে একটা জিনিস জানানো দরকার। একজনের সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে।’
কার সঙ্গে সে সম্পর্ক সেটা জানাতেই চিৎকার শুরু করেন অ্যানি। ওয়াকার এর মধ্যেই বলেন, ‘তোমাকে আরও কিছু বলার আছে।’ অ্যানি নাকি বলেছিলেন, ‘কাইল, দয়া কর। এর বাইরেও কিছু থাকতে পারে না।’ যিনি পরে স্বীকার করেছিলেন, ‘আমার মাথায় “বাচ্চা”র কথা আসেওনি। একটা দুঃস্বপ্ন ছিল। আমি কিছু ভাবার আগেই সে বলল, “লরিন বলছে সে গর্ভধারণ করেছে এবং বাচ্চার বাবা আমি।”’
কাইলকে বাড়ি থেকে বের করে দেন অ্যানি। কিন্তু বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে আবার তাঁকে ফিরে আসতে দেন। কাইল প্রতিজ্ঞা করেন, বাচ্চার ভরণপোষণ দেওয়া বাদে লরিনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না আর। কিন্তু ২০২২ সালে লরিন ঘোষণা দেন, ওয়াকারদের বাড়ির কাছে নতুন বাসা খুঁজছেন। কাইল দাবি করেছেন, আইনজীবীর অফিসে গিয়ে লরিনকে আটকাতে চেয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর ছেলে কাইরোর সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা হয় তাঁর এবং এরপর আবার লরিনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন ওয়াকার।
২০২২ সালের অক্টোবরে কুঁচকির চোটে পড়া ওয়াকার লন্ডনে চিকিৎসার জন্য যান এবং লরিনের সঙ্গে দেখা করেন, ‘ইচ্ছাকৃত বা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না, কিন্তু আমি ওর সঙ্গে আবার শারীরিক সম্পর্কে যাই। নেক কিছু ঘটছিল। অযুহাত দিচ্ছি না। আমার কুঁচকির পেশি ছিঁড়েছিল, বিশ্বকাপের জন্য ফিট হওয়ার চেষ্টা করছিলাম।’
এরপরই বোমা ফুটল, লরিন আবার গর্ভধারণ করেছেন, ‘লরিন আমাকে অক্টোবরের শেষ, নভেম্বরের শুরুতে জানায়। মনে হচ্ছে ট্রেনিং গ্রাউন্ডের ওপরতলায় যাচ্ছিলাম, এ সময় ফোন এল। ওই সময় আমার সঙ্গে ফিজিও ছিল। প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। একদম সাদা হয়ে গিয়েছিলাম। ফিজিও বলল, “কী হয়েছে?” কিছু বলিনি, কারণ আগে খবরটা হজম তো করতে হবে।’
এমন বিপদে পড়ার পেহচনে নিজেরই দায় দেখছেন ওয়াকার, ‘কেউ আমার কপালে বন্দুক ধরে বলেনি যে এসব কর। নিজ থেকেই করেছি এবং এর জন্য কাউকে দোষারোপ করছি না। আমি করেছি, আমি ও লরিন। অতীতে ফিরে ভিন্ন কিছু করা সম্ভব হলে তাই করতাম। আমি জানতাম এমন কিছু হবে। দ্বিতীয় বাচ্চার জন্ম হলো এবং ডেডলাইন ঠিক হয়ে গেল। ’
তারপর গত বক্সিং ডের পরদিন লরিন অ্যানিকে ইনস্টাগ্রামে একটা মেসেজ দেন, ‘আমার বাচ্চাদের বাবা কিন্তু ভিন্ন দুজন না-একজনই তাদের বাবা।’ এরপর দুই বাচ্চা ও তাঁর সঙ্গে পার্কে ওয়াকারের সময় কাটানোর একটি ছবি পাঠিয়ে দেন।
লরিন এমন বার্তা পাঠানোর কারণ তিনি জানতে পেরেছিলেন, ওদিকে অ্যানিও আবার মা হতে চলেছেন। কাইলের এখনো মনে আছে, ‘বড়দিনের আগে ক্লাব বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরতেই বুঝতে পারলাম ঝামেলা হতে যাচ্ছে। লরিন আমাকে ফোন করে চিৎকার করে বলছিল, অ্যানি গর্ভবতী। আমি বলেছিল, না সে না। এ নিয়ে কথা বলার কেউ না সে, আমার মনে হয়েছিল, ওর কাছে মিথ্যা বলতে হবে না হলে সব ফাঁস হয়ে যাবে।’
যদিও তাতে কোনো লাভ হয়নি, বোমা ঠিকই ফুটেছে।
আরবিসি /৩০ জানুয়ারি / রোজি