আরবিসি ডেস্ক : ৩১ বছর আগে গুঁড়িয়ে দেওয়া ‘বাবরি মসজিদের’ স্থলে নির্মিত আলোচিত সেই রামমন্দিরের উদ্বোধন হল আজ। অযোধ্যায় মহা ধুমধাম করে রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় রামলালার (শিশু রামচন্দ্র) ।
রাষ্ট্রীয় মহাসমারোহে সোমাবর স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট) উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টা) এই অনুষ্ঠান শেষ হয়। ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ নামের এই অনুষ্ঠান আজ সোমবার উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শ্রী রামজন্মভূমি ট্রাস্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রায় আট হাজার অতিথির উপস্থিতিতে, আলো ঝলমলে সুসজ্জিত অযোধ্যায় এই মহোৎসব পালিত হয়। এ সময় নিñিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় গোটা এলাকা।
বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ এবং কমান্ডোবাহিনী তো আছেই, এ ছাড়া প্রতিটি উঁচু বাড়ির মাথায় বিশেষ রাইফেল নিয়ে পাহারা দেন স্নাইপারা। আকাশে উড়ে অত্যাধুনিক নজরদারি ড্রোন। বসানো হয় ১০ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায়ও প্রস্তুত রাখা হয় প্রশিক্ষিত বাহিনী।
অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের সময় পুষ্পবৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয় আকাশ থেকে। হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছড়িয়ে দেওয়া হয় অযোধ্যার ওপর। অনুষ্ঠানের শুরুর পর নরেন্দ্র মোদি হাতে পুজার ডালা নিয়ে ধীরে ধীরে মন্দিরের ভেতর এগিয়ে যান। রামমন্দিরের ভেতরের রামলালার বিগ্রহের চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। এই সময়েই দেশের বিভিন্ন মঠ-মন্দির থেকে আমন্ত্রিত ১২১ আচার্য ও পূজারির মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় রামলালার প্রাণ।
সেখানে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ছিলেন যোগী আদিত্যনাথ এবং মোহন ভাগবত। হাতে পদ্মফুল নিয়ে পুজা করেন প্রধানমন্ত্রী।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঘটে তারকা-সমাবেশ। রাজনীতিবিদরা যেমন ছিলেণ, তেমনই ছিলেন শিল্পপতি, বলিউড সুপারস্টার ও আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রের নক্ষত্ররা। অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগেই পৌঁছে যান অমিতাভ ও অভিষেক বচ্চন। পৌঁছে যান মাধুরী দীক্ষিত, কঙ্গনা রানাওয়াত, ভিকি কৌশল, ক্যাটরিনা কাইফ, রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট, অংশুমান খুরানা, রোহিত শেটি, রাজকুমার হিরানি, মহাবীর জৈনরা। তেলুগু তারকা চিরঞ্জীবি ও রাম চরণ ছিলেন। ছিলেন অভিনেতা মনোজ জোশী। বলিউডের প্রচুর তারকা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না তিন খান, সলমন, শাহরুখ ও আমির খান। সূত্র জানাচ্ছে, তারা আমন্ত্রণ পাননি।
রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে ছিলেন শচিন টেন্ডুলকর, অনিল কুম্বলে। রণদীপ হুডা, অনুপম খেররাও সময়ের আগে পৌঁছে যান। তবে রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সকালেই অযোধ্যা পৌঁছে যান। পৌঁছে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া, অন্ধ্র প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগবতও।
ইন্ডিয়া জোটের শরিক বিরোধী দলগুলো এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, লোকসভার নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীও রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যাননি। রাহুল গান্ধী এখন উত্তর-পূর্বে ন্যায় যাত্রা করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় পাল্টা সংহতি মিছিল করছেন।
সূত্র: আনন্দবাজার, এই সময়, ডয়চে ভেলে
আরবিসি/২২ জানুয়ারি/ রোজি