• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৮ অপরাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ

বাগমারায় নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিইসি বরাবর অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ

Reporter Name / ৫৯২ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের কারণে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করা হয়েছে। ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তা রুবিনা পারভীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনের সচিবের কাছে পাঠানো আলাদা দুটি প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করেন।

গত সোমবার নির্বাচন কমিশনের সচিবের কাছে লেখা প্রতিবেদনে রুবিনা পারভীন উল্লেখ করেন, রাজশাহী-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ও তার সমর্থকরা অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এনামুল হককে প্রাণনাশের হুমকিসহ প্রতিনিয়ত পোস্টার ছিঁড়া, প্রচার মাইক ও অফিস ভাঙচুরসহ হামলা করে যাচ্ছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে গোয়ালকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন গ্রাম পুলিশদের নিয়ে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের পক্ষে প্রচারণা করেন এবং এনামুল হকের পোস্টার, ব্যানার ও অফিস ভাঙচুর করেন। কাঁচি প্রতীকের সমর্থকদের হুমকিও প্রদান করছেন। এনামুলের পক্ষে এই অভিযোগ দায়েরের পর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে। তাই নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম ও আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।

আরেক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজশাহী-৪ (বাগামরা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বিভিন্ন সময়ে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী তিনবারের সংসদ সদস্য এনামুল হককে প্রাণনাশের হুমকি, অশ্লীল ভাষায় আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদান করেছেন।

গত ১২ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া দেড় মিনিটের একটি ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার সাথে যারা ভাল ব্যবহার করবে, তাদের কাছে আমি ফেরেশতা। যারা খারাপ করবে তারা পৃথিবী থেকে নাই হয়ে যাবে। একটা কথা বললাম। আজাহার-মাজাহার (এনামুলের সমর্থক) এলাকায় থাকবে না’। কালাম অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে আরো বলেন, নৌকার বাইরে কথা বললে আজাহারের চেহারা চেঞ্জ হয়ে যাবে। নৌকার বাইরে কোনো মাস্তানি চলবে না। এনামুলের মতো লোককে ভুলি দিয়ে নৌকা নিয়ে আসিছি’।

এছাড়া এনামুল হকের সমর্থক গোবিন্দপাড়া ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহেব আলীকে গত ১৪ ডিসেম্বর রুহিয়া মামুদপুর মোড়ে মারধর করেন। এ ঘটনায় বাগমারা থানায় মামলা হয়। যা নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির তদন্তেও ধরা পড়েছে।

এদিকে, এসব অভিযোগ পাওয়ার পর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি আবুল কালাম আজাদের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা তলব করেন। ব্যাখ্যায় বেশিরভাগ অভিযোগের কথা অস্বীকার করেন তিনি। তবে আচরণবিধি ভঙ্গ হয়ে থাকলে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন কালাম। তখন তাকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু এরপরও বার বার একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

অনুসন্ধান কমিটির তদন্তে ধরা পড়েছে, কালামের উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি এবং উচ্ছৃংখল আচরণ সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতির সঞ্চার করেছে যা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্তরায়। তাই আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

উল্লেখ্য, এই আসনে ২০০৮ সাল থেকে তিন বারের এমপি এনামুল হক। তবে এবার দলীয় মনোনয়ন হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক। তার বিপরীতে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।

ভোটের প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকেই একের পর এক হুংকার দিয়ে যাচ্ছেন আবুল কালাম আজাদ। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এ আসনের বর্তমান এমপি এনামুল হককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করেছেন। এর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

এনামুল হকের প্রচার মিছিলে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে। এমন পরিস্থিতিতে নৌকার প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এনামুল হক এমপি।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাগমারা উপজেলার দক্ষিণ জামালপুর বাজারে গণসংযোগ কালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে এ আসনের নৌকার প্রাথী আবুল কালাম আজাদ ফোন রিসিভ করেন নি।

আরবিসি/ ০২ জানুয়ারি / রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category