আরবিসি ডেস্ক : ঢাকায় অনুষ্ঠিত “আমিও জিততে চাই ইয়ুথ সামিট” – এ তরুণরা কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তরুণদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ারও আহ্বান জানান তারা।
শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত “আমিও জিততে চাই ইয়ুথ সামিট ২০২৩” এ অংশগ্রহণকারীরা কর্মসংস্থান ছাড়াও নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে তাদের নানা প্রত্যাশা তুলে ধরেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও যুব সংগঠনের শতাধিক তরুণের অংশগ্রহণে এ ইয়ুথ সামিটে নাগরিক ইস্যু নিয়ে বির্তক, কুইজ ও ভিডিও বার্তা তৈরি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সামিটের অংশ হিসেবে আয়োজিত ‘আমিও জিততে চাই আঃন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা’য় রাজশাহী ইউনির্ভাসিটি ডিবেটিং অর্গানাইজেশন-আরইউডিও দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর ইউনির্ভাসিটি ডিবেটিং সোসাইটি-জেইউডিএস দল। এতে ডিবেটর অব দ্য ট্যুর্নামেন্ট হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিক মো: ওবায়দুল্লাহ। সংসদীয় পদ্ধতির এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিলো ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি-ডিইউডিএস। প্রতিযোগিতায় ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪টি বিতর্ক দল অংশ নেয়।
প্রতিযোগিতায় বিতার্কিকরা বলেন, একজন তরুণ চাকুরীর বাইরে উদ্যোক্তা হতে চাইলে দেশে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখিন হতে হয়। ব্যাংক লোন ও সরকারি পরিষেবা এখনও সহজ নয়। কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠির তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগও পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে তারা বলেন, অর্থনীতিতে তরুণদের সম্ভাবণা ঠিকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না।
ভিডিও বার্তা প্রতিযোগিতায় তরুণদের কাছে অন্যান্য প্রত্যাশার সাথে নিরাপত্তা ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে। প্রতিযোগিরা বলেন, রাস্তাঘাট ও গণপরিবহনে চলাচলে তরুণরা বিশেষ করে নারীরা নানা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। পাশাপাশি সাইবার স্পেস বুলিং ও সাইবার ক্রাইমের কারনে একটি বড় অংশের তরুণদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে হতাশা। এছাড়া সরকারের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবার মানের উন্নতি, নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটারি ব্যবস্থাপনা ও মশা নিধনের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে তাগিদ দেন তারা।
অংশগ্রহণকারীরা আরও বলেন, বেশিরভাগ তরুণই রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছেন এবং তারা রাজনৈতিক আলোচনায় আগ্রহী নন, কারণ তারা মনে করেন তাদের মতামত সেভাবে গুরুত্ব পায় না। দেশের উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে, তরুণদের প্রত্যাশাগুলোকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য নীতি নির্ধারক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অংশগ্রহণকারী তরুণরা আহ্বান জানান।
তরুণদের কথাতে উঠে আসা কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আলোচনায় বক্তব্য রাখেন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনিরা রহমান, উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী তাসলিমা মিজি ও জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নাগরিক সমস্যাসমূহ তুলে ধরে কাজী রোখসানা রুমার পারফরমেন্সে একটি মঞ্চ নাটক পরিবেশিত হয়, এর উপর ভিত্তি করে আয়োজিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতা।
“আমিও জিততে চাই”- ক্যাম্পেইনটি রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীদারদের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশা তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
আরবিসি/২২ ডিসেম্বর/ রোজি