স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর নীল আকাশটা যেন আজ উত্তপ্ত কড়ইয়ে পরিণত হয়েছে। বাতাসে যেন বইছে আগুনের হল্কা। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে পদ্মা পাড়ের মানুষগুলোর। শেষ চৈত্রের খরতাপে সাধারণ মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত।
একটু হিমেল হাওয়া আর স্বস্তির বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মতো সবাই তাকিয়ে আছে অগ্নিবর্ষণকারী আকাশের দিকেই। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই।
টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে রাজশাহীতে। প্রথম দিকে মৃদু তাপপ্রবাহ ছিল। এরপর শুরু হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আজ (১৩ এপ্রিল) সেই তাপপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করেছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের থার্মোমিটারের পারদ উঠতে উঠতে আজ (১৩ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এতে নাকাল হয়ে পড়েছে নগরজীবন।
এদিন (১৩ এপ্রিল) দুপুরের পর প্রধান প্রধান সড়কও ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তবে খেটে খাওয়া দিনমজুররা এই আগুন আবহাওয়ার মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবার-পরিজনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
গাছের ছায়াও যেন উষ্ণ হয়ে উঠেছে। ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রতিটি ভবনের ট্যাপকল দিয়ে বের হচ্ছে ফুটন্ত পানি। আর টিনশেড বাড়িগুলো পরিণত হয়েছে অগ্নিকুণ্ডে। ভেতরে থাকা মানুষগুলো তাই যারপরনাই দুর্ভোগে পড়েছেন।
গরমের তীব্রতা অব্যাহত থাকায় রাজশাহীতে বেড়েছে হিটস্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানান, রাজশাহীতে আজ (১৩ এপ্রিল) এই মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন (১৩ এপ্রিল) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে গত বছরের ১৫ এপ্রিল রাজশাহী সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারপর গেল এক বছরে আর রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এতো ওপরে ওঠেনি।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ১৩ এপ্রিল দুপুরে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে গেছে বাতাসের আদ্রতাও। বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৩ শতাংশ। আর বাতাসের আদ্রতা কমে যাওয়ার কারণে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দিচ্ছে। ফাটছে ঠোঁট এবং হাত-পা।
বৃষ্টি ছাড়া এই তাপমাত্রা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই, তবে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনাও কম। উল্টো আগামী কয়েকদিনে রাজশাহীর এই তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।
আরবিসি/১৪ এপ্রিল/ রোজি