• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ পূর্বাহ্ন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নির্মল বিনোদনে প্রস্তুত হচ্ছে শিশুপার্ক

Reporter Name / ১২৯ Time View
Update : শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা শহরের কোমলমতি শিশুরা স্কুলের ভারী ভ্যাগ টানতে টানতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। তারা খেলাধুলা কিংবা বিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। পাড়া মহল্লায় খেলার মাঠ নাথাকায় তারা ইচ্ছে থাকলেও খেলবার সুযোগ পাচ্ছেনা। অন্যদিকে শিশুদের জন্য শহর কেন্দ্রিক পার্ক না থাকায় তাদের মানসিক বিকাশ বাধগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে একটি মানসম্মত শিশুপার্কের চাহিদা থাকলেও তা না থাকায় সে সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত হয়ে আসছে। তবে আশার কথা শিশু পার্ক না থাকার এই খরা কাটিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ‘কালেক্টরেট শিশু পার্কটি চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করায় সেই খরা কাটিয়ে উঠবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

জানা যায়, জেলা প্রশাসনের কর্তৃত্বাধীন ক্যালেক্টরেট শিশু পার্কটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। অবশেষে সেই শিশুপার্কটি পূর্ণাঙ্গ শিশু পার্ক হিসেবে চালু হতে যাচ্ছে। আর এ শিশুপার্কটি উদ্বোধন হয়ে গেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিশুরাসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষজন এখানে ছুটিরদিনসহ অবসর সময়ে এখানে এসে ঘুরে যাবেন। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁনের নির্দেশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এ পার্কটির নতুন আঙ্গিকে সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পার্কের মধ্যবর্তী স্থানে একটি সুন্দর বড় ঝরণা, একদিকের প্রবেশ মুখে স্টাচু অব লির্বার্টি, গরিলা, ড্রাগন, ডায়নাসর, বড় হাতি ছোট হাতি, আমের প্রতিকৃতি, অন্যদিকের প্রবেশ মুখে বিভিন্ন ধরনের পাখি, এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় বাঘ, জিরাপ, ঘোড়া, হরিন, পক্সিক্ষরাজ, ক্যাঙ্গারু, মটু-পাতলু, মিকি, খরগোস, ময়ূর, স্পিং, দোলনা, সাইকেল, হাঁস, দোয়েল, কবুতরসহ আরো অংসখ্য প্রাণির প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে সব খেলার ও বসার সামগ্রী। এই পার্কটি চালুর পর শিশুরা এখানে এসে সেইসব প্রাণিদের সম্পর্কে জানতে পারবে, তাদের মানসিক বিকাশও ঘটবে। পার্কের যেকোন একদিকে একটি ক্যান্টিন ও দোকান করা হবে। যাতে বিনোদন প্রেমীরা পার্কে ঘুরতে এসে হালকা খাবারও খেতে পারে।

শিগরিই এটি উদ্বোধন করা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে স্কুল, কলেজ, মার্কেট, জেলা প্রশাসকের কার্যলয়, কোর্টচত্বর, স্টেডিয়াম থাকলেও এখানে শিশুদের মানসিক বিকাশে তেমন কোন পার্ক না থাকায় একদম শহর থেকে বাইরে বিভিন্ন স্থানে মানুষজন শিশু ও পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে যায়। শিশুদের বড় হওয়ার পাশাপাশি তাদের মানসিক পরিপক্কতার জন্য দরকার বাইরের পৃথিবীর আলো-বাতাস, এক টুকরো খোলা মাঠ। শিশু যদি আনন্দ নিয়ে কোনোকিছু শিখতে পারে তাহলে তা আর সারাজীবনেও ভোলে না। শেখার ব্যাপারটি বাদ দিলেও তাদের নির্মল বিনোদনের জন্য কতোটা করতে পারছেন এসময়ের অভিভাবকরা। সেই সুযোগ নেই বললেই চলে। এখন শিশুরা ছোট থেকেই পড়াশুনার ভারে স্কুল কলেজ মুখী হয়ে গেছে। তবে তার মধ্য থেকেও শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য অভিভাবকের দায়িত্বশীল থাকাটা জরুরি।

সম্প্রতি জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন পার্কটির চলমান কাজ পরিদর্শন করেছেন। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদ, এনডিসি তৌফিক আজিজ, সহকারী কমিশনার মিঠুন মৈত্র, আমিনুল ইসলাম।

ক্যালেক্টরেট শিশু পার্কটির বিষয়ে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন বলেন, জেলা প্রশাসনের ১ একর ৭০ শতক জায়গা নিয়ে এ পার্ক। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় সেখানে কেউ যাতাযাত করতো না। এছাড়াও এ অঞ্চলে শিশুদের জন্য ভালো কোন পার্ক না থাকায় আমরা এ ক্যালেক্টরেট পার্কটি শিশুদের উপযোগী করার সিদ্ধান্ত নেই। আমরা সুস্থ মানুষের জন্য ওয়ার্কওয়ে, শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইড, খেলনা দিয়ে সাজানোর চেষ্টা করছি। আশেপাশের বিভিন্ন স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা এখানে ঘরতে আসবে। আমরা চাই এ পার্কটি এ জেলার মানুষের বিকেল বেলার সুস্থ বিনোদন পার্ক হোক।

পার্কের সার্বিক দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন স্যারের পরিকল্পনায় জেলা পর্যায়ে শিশুদের সুস্থ বিনোদনের জন্য বিভিন্ন প্রাণির ম্যুরাল ও খেলাধূলার রাইড স্থাপন, বিভিন্ন ডিজাইনের বসার জায়গা নির্মাণ, পার্কিং টাইলস দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করছি। এসব কাজের মাধ্যমে কালেক্টরেট শিশুপার্কটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শিশুপার্কটি পরিবর্ধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত অবস্থায় চালু হতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এই শিশুপার্কটি এই এলাকার শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী জনসাধারণের কাছে অবসর সময়ের অন্যতম আকর্ষণীয় নির্মল বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হবে এবং শিশুদের মানসিক বিকাশে পার্কটি অন্যতম ভূমিকা থাকবে। ইতোমধ্যেই অনেকের কাছ থেকে শিশুপার্কটির বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

আরবিসি/০১ এপ্রিল/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category