• বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন

ছয় দিনেও সচল হয়নি বিনোদপুর বাজার

Reporter Name / ৩২৯ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনার পর ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসের পাশাপাশি পরীক্ষাও যথারীতি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার তুলনামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।

তবে সংঘর্ষের পর ষষ্ঠ দিনেও চালু হয়নি বিনোদপুর বাজার। সেখানে যাচেছ না শিক্ষার্থীরা। বাজারের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক সচল হয়নি বাজারটি।

জানা গেছে, বিনোদপুর বাজারে প্রায় ৪০০ দোকান আছে। এর মধ্যে বাজারের অলিগলিতে হাতে গোনা দু-একটি দোকান খোলা হচেছ। এর মধ্যে অধিকাংশই সবজি, মাছ ও মুরগির দোকান। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখনো ওই বাজারে যাচ্ছেন না। ফলে বেচা কেনা নেই তাদের।

গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাসচালকের তর্কাতর্কির জেরে নগরের বিনোদপুর বাজারে সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও লোকজন এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
হামলা-সংঘর্ষ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল এবং রাবার বুলেটে আহত হন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় একটি পুলিশ বক্স ও রাস্তার পাশের অন্তত ৩০টি দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মামলা করেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, ঘটনাস্থল বিনোদপুর বাজারের ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য এখনো দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। ওই বাজারের দক্ষিণ সারির প্রায় সব কটি দোকান বন্ধ। তবে সকালে ওই সারির ভেতরের দিকে কয়েকটি দোকান খোলা পাওয়া যায়। সেই দোকানগুলো পুরোপুরি খোলা নয়। তাঁরা দোকানের একটি সাটার খুলে কিছু পণ্য বিক্রি করছেন। বাজারের উত্তর পাশটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুড়ে যাওয়া ও ভেঙে যাওয়া দোকানপাট এখনো ঠিক করা হয়নি।
উত্তর পাশে মো. বাদশাহ ও আলাউদ্দিন নামের দুই ব্যক্তি একটা খাঁচায় কিছু মুরগি নিয়ে বসে ছিলেন। বাদশাহ বলেন, সকাল থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সাত-আটটি মুরগি বিক্রি করতে পেরেছেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁরা কিনেছেন তাঁরা সবাই বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭টি হলের মধ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বিনোদপুরে কেনাকাটা করে থাকেন। তবে সংঘর্ষের দিন থেকে তাঁরা বিনোদপুরে যাচ্ছেন না। অনেকেই বিনোদপুর বাজারকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা কেনাকাটার জন্য বেছে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের স্টেশন বাজার।

বিনোদপুর বাজার সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আগের সম্পর্ক ফিরে আসুক, এটা তারাও চান। এ জন্য তারা আলোচনা চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আলোচনাই একমাত্র সমাধান বলে তিনি মনে করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। ক্লাসের পাশাপাশি পরীক্ষাও চলছে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কাজে মন দিচ্ছেন। পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজও চলছে।

বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় মেস মালিকদের সঙ্গে বসেছেন তাঁরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভালো আচরণের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে বিনোদপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা আছে। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।

আরবিসি/১৬ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category