স্টাফ রিপোর্টার : ভারতে পালিয়ে আত্মগোপনের পর দেশে ফেরার পথে রাজশাহী নগর গোয়েন্দা পুলিশে জালে ধরা পড়েছে নিয়োগ ও ভর্তিসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের মুল হোতা। তার নাম নয়ন ইসলাম (২৫)। সে রাজশাহীর বাগমারা থানার অচিনঘাট এলাকার আজগর হোসেন মন্ডলের ছেলে।
নয়ন রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা। নিজেকে কখনো চিকিৎসক, কখনো সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানা এলাকার পিজি টাওয়ারে বসবাস করছিলো। গত সোমবার ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে দেশে ফেরার পথে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ বুধবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। পুলিশ জানায়, এ চক্রের অন্য সদস্যদের সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতেও অভিযান চলছে।
পুলিশ জানায়, এ চক্রটি ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে জাল প্রশ্নপত্র ও প্রবেশপত্র তৈরি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো। পুলিশ গ্রেফতার নয়নের কাছ থেকে নিয়োগসহ বিভিন্ন পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড, পরীক্ষার প্রবেশপত্র, জীবন বৃত্তান্ত, নাগরিক সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও উদ্ধার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) বিজয় বসাক জানান, সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে তার অবস্থান সনাক্ত করা হয়। সে নগরীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের মালিকদের সহযোগিতায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ভর্তিচ্ছু ও চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরীক্ষার প্রবেশপত্রের কপি এবং চুক্তি মোতাবেক অর্থের জিম্মা হিসাবে তাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল সনদপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহ-সহ প্রাথমিক খরচ হিসেবে বিকাশ, রকেট এবং নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নগদ টাকা সংগ্রহ করে আসছিলো।
এসব তথ্য নিশ্চিতের পর মহানগর পুলিশের একটি টিম জালিয়াত চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশের টিম নগরীর পিজি টাওয়ারে অভিযান পরিচালনায় গেলে নয়ন কৌশলে পালিয়ে যায়। তবে গোয়েন্দা পুলিশ প্রতারক চক্রের মূল হোতাদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে। পরে আসামি নয়নসহ সহযোগীরা যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য দেশের সব বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরসমূহে বিশেষ পত্র প্রেরণ করেন। তবে আসামি নয়ন এর আগেই ভারতে পালিয়ে যায়।
সেখান থেকে গত সোমবার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশের সময় ইমিগেশন পুলিশ তাকে আটক করে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাজশাহী নগর গোয়েন্দা পুলিশ বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে নয়নকে হেফাজতে নেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন জানায়, সে ও তার সহযোগীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলর বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র সনেট এবং আরো অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন সহযোগী বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতারণা করে আসছিলো। এ ঘটনায় নয়নসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পেনাল কোডে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরবিসি /০৮ মার্চ / রোজি