• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

ফেব্রুয়ারিতে সড়কে নিহত ৪৮৭ জন

Reporter Name / ৭৬ Time View
Update : বুধবার, ৮ মার্চ, ২০২৩

আরবিসি ডেস্ক: গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩৯টি। নিহত ৪৮৭ জন এবং আহত ৭১২ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৫৪, শিশু ৬৮। ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৬ জন, যা মোট নিহতের ৪০.২৪ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪১.৬৮ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৮ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২২.১৭ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭২ জন, অর্থাৎ ১৪.৭৮ শতাংশ।

এই সময়ে ৯টি নৌদুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ৭ জন আহত হয়েছে। ১৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ৫ জন আহত ও ৩০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল নষ্ট হয়েছে। বুধবার প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়— মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৯৬ জন (৪০.২৪%), বাসযাত্রী ২১ জন (৪.৩১%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি আরোহী ২২ জন (৪.৫১%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী ১৬ জন (৩.২৮%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-ম্যাক্সি-টেম্পু) ১০১ জন (২০.৭৩%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম-পাওয়ারটিলার-ইট ভাঙ্গার মেশিন গাড়ি) ১৮ জন (৩.৬৯%) এবং বাইসাইকেল আরোহী ৫ জন (১.০২%) নিহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬৮টি (৩৮.২৬%) জাতীয় মহাসড়কে, ১৭৭টি (৪০.৩১%) আঞ্চলিক সড়কে, ৬১টি (১৩.৮৯%) গ্রামীণ সড়কে, ২৯টি (৬.৬০%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি (০.৯১%) সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনাগুলোর ৬৮টি (১৫.৪৮%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২০১টি (৪৫.৭৮%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১১২টি (২৫.৫১%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৪৭টি (১০.৭০%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১১টি (২.৫০%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে—ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২৩.৮৬%, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রামট্রাক-তেলবাহী ট্যাঙ্কার ৬.৭২%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স ৬.১৭%, যাত্রীবাহী বাস ১৩.১৬%, মোটরসাইকেল ২৬.২০%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-ম্যাক্সি-টেম্পু) ১৬.১৮%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-চান্দের গাড়ি-আলগানন-টমটম-মাহিন্দ্র-পাওয়ারটিলার) ৭.১৩% এবং বাইসাইকেল ০.৫৪%।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৭২৯টি। ট্রাক ১৩২, বাস ৯৬, কাভার্ডভ্যান ২৪, পিকআপ ১৮, ট্রলি ২০, লরি ৩, ট্রাক্টর ১৬, ড্রাম ট্রাক ৯, তেলের ট্যাঙ্কার ১, মাইক্রোবাস ১৪, প্রাইভেটকার ২৬, অ্যাম্বুলেন্স ৫, মোটরসাইকেল ১৯১, থ্রি-হুইলার ১১৮ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-ম্যাক্সি-টেম্পু), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৫২ (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-চান্দের গাড়ি-টমটম-মাহিন্দ্র-আলগানন-পটাংগাড়ি-পাওয়ারটিলার) এবং বাইসাইকেল ৪টি।

সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ৪.৭৮%, সকালে ২৭.১০%, দুপুরে ২৪.১৪%, বিকালে ২০.০৪%, সন্ধ্যায় ৬.৩৭% এবং রাতে ১৭.৫৩%। দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৫.৭৪%, প্রাণহানি ২৪.৮৪%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬.৬২%, প্রাণহানি ১৯.৭১%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯.৮১%, প্রাণহানি ১৮.৮৯%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১০.৯৩%, প্রাণহানি ৯.৮৫%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৬৯%, প্রাণহানি ৫.৩৩%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৪৬%, প্রাণহানি ৬.৭৭%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১০.৭০%, প্রাণহানি ১০.০৬% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৫%, প্রাণহানি ৪.৫১% ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১১৩টি দুর্ঘটনায় ১২১ জন নিহত। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। ২২টি দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছে। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ৩৩টি দুর্ঘটনায় ৩৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সবচেয়ে কম মেহেরপুর জেলায়। ৩টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।

রাজধানী ঢাকায় ২৩টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ৩ জন, সেনা সদস্য ২ জন, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক ১৬ জন, পদ্মা ব্রিজের চীনা প্রকৌশলী ১ জন, সাংবাদিক ৩ জন, আইনজীবী ৪ জন, কৃষি কর্মকর্তা ১ জন, বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ৯ জন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১২ জন, ওষুধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ২৩ জন, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ২৯ জন, পোশাক শ্রমিক ৬ জন, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিক ১ জন, ইটভাটা শ্রমিক ৬ জন, সিরামিক ২ জন, গাছ কাটা শ্রমিক ৫ জন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ১৪ জন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ জন ছাত্রসহ সারা দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬২ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

আরবিসি/০৮ মার্চ/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category