• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে এমপির ভাতিজা পরিচয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে প্রতারণা

Reporter Name / ১৭১ Time View
Update : বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী-১ আসনের (তানোর-গোদাগাড়ী) সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে সরকারী চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে থিম ওমর প্লাজার কর্মকর্তা নাহিদুজ্জামান পাপ্পুর নামে।

মঙ্গলবার বিকেলে প্রতারণার শিকার ৩০ থেকে ৪০ জন যুবক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী নগরীর বিসিক এলাকার ম্যাচ ফ্যাক্টারির সামনে পাপ্পুর বাসা ঘেরাও করে। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় পুলিশ গিয়ে পাপ্পুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

নাহিদুজ্জামান পাপ্পু এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর শপিংমল থিম ওমর প্লাজার প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তার বাড়ি নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায়। তবে তিনি নগরীর সুপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টারির সামনে ফ্লাট কিনে সেখানে বসবাস করেন।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জনরোষ থেকে পাপ্পুকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’’

ভুক্তভোগিরা জানান, ‘‘পাপ্পু নিজেকে এমপি ওমর ফারুক চৌধুীর ভাতিজা পরিচয় দিতেন। তিনি এমপিকে দিয়ে চাকরি নিয়ে দেবেন এমন আশ্বাসও দেন। চাকরি নিয়ে দেয়ার নাম করে ২৫ থেকে ৩০ জনের কাছ থেকে তিনি প্রায় তিন কোটি হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু কারও কপালে জোটেনি চাকরি। বরং পাপ্পুর কাছে টাকা ফেতর চাইলে উল্টা চাঁদাবাজির মামলার দিয়ে পুলিশে দেয়ার হুমকি-ধামকি দিত।’’

তারা আরও জানান, ‘‘টাকার জন্য চাপ দিয়ে অনেকেই চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দেয়া হয়। ভুয়া ওই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিরস্থলে যোগদান করতে গিয়ে অনেকেই হয়রানির শিকার হয়েছেন।’’

পুলিশের এসআই পদে চাকরি নিয়ে দেয়ার নামে ফায়সাল হোসেন নামের এক যুবকের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পাপ্পু। এই টাকা নিয়েছেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর নামে। এমপি ফারুক চৌধুরী তাকে চাকরি নিয়ে দিবে বলে তার কাছ থেকে এ টাকা নেয়া হয়।

ফায়সাল জানান, ‘‘আমার সাথে চুক্তি হয় ২০ লাখ টাকা। কিন্তু বছর গড়ালেও পুলিশের চাকরি পায়নি। টাকা ফেরত চাইতে গেলে তিনি এমপির ভয় দেখান। হুমকি ধামকি দেন। আবার বলেন, এমপি টাকা নিয়েছেন তার কাছে গিয়ে টাকা ফেরত নেন।’’

প্রতারণার শিকার আলমগীর হোসেন জানান, ‘‘এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা পরিচয় দিয়ে পাপ্পু আমাকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে। এ জন্য আমার কাছ থেকে তিনি ২ লাখ টাকা নেয়। চাকরি পাওয়ার পর আরও তিন লাখ টাকা দেয়ার কথা ছিল।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে আরও আটজনের কাছ থেকে দুই লাখ করে টাকা নিয়েছে। কিন্তু টাকা নেয়া দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও কাউকে চাকরি দিতে পারেনি পাপ্পু। একাধিকবার টাকা ফেরত চাইলেও টাকা দেয়নি। সম্প্রতি টাকা চাইতে গেলে আমাকে চাঁদাবাজির মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।’’

চাররি প্রার্থী ইমন আলী জানান, ‘‘রেলে চাকরি দেয়ার নামে তার কাছে থেকে ১১ লাখ টাকা হারিয়ে নেয় পাপ্পু। গত বছর তাকে রেলে চাকরি দেয়ার কথা ছিল। রেলে চাকরি দেয়ার কথা বলে আমিসহ আরও ১০ জনের কাছ থেকে এক কোটি টাকার বেশী হাতিয়ে নিয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ভুয়া নিয়োগপত্রও দেয়া হয়। আমরা ১০ জনই নিয়োগপত্র পাওয়ার পর চট্টগ্রাম রেলের দপ্তরে যাই যোগদান করতে। সেখানে গিয়ে জানতে পারি আমাদের নিয়োগপত্র ভুয়া। পরে তারা ফিরে এসে পাপ্পুকে বিষয়টি জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তারা টাকা ফেরত চাইলে গড়িমশি শুরু করেন পাপ্পু। এক পর্যায়ে টাকা ফেরত দিবে বলে দিন নেন। কিন্তু সময় গড়ালেও তিনি আর টাকা ফেরত দেননি।’’

আরবিসি /০১ মার্চ / রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category