স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় নির্মিত ১৬তলা বিশিষ্ট ভবন ‘সিটি সেন্টার’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো। আজ শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর সোনাদিঘি মোড়ে ফিতা কেটে অত্যাধুনিক শপিং কমপ্লেক্স সিটি সেন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং এনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি। সিটি সেন্টারের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সেখানে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র বলেন, দীর্ঘদিন জায়গাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। আর সোনাদিঘি তার ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছিল। আমি প্রথম মেয়াদে মেয়র থাকাকালে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও আমার পরিষদের কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে পিপিপি‘র আওতায় সিটি সেন্টার ও সোনদিঘিকে সাজানো উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেটি বাস্তবায়িত হলো। সিটি সেন্টার হচ্ছে রাজশাহী চমৎকার আধুনিক বিপনী কেন্দ্র।
মেয়র আরো বলেন, রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত কোন ফাইফ স্টার হোটেল নেই। তবে এবার এই সিটি সেন্টারের ফাইভ স্টার ‘হোটেল রেডিসন’ করার উদ্যোগ নিয়েছে এনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ এনামুল হক। এই উদ্যোগের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। ‘হোটেল রেডিসন’ রাজশাহীকে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি বলেন, এই সিটি সেন্টার রাজশাহী শহর আধুনিকায়নে এক অনন্য মাত্রার যোগ। রাজশাহীতে এই সিটি সেন্টার মার্কেটপ্লেস এবং রেডিসন হোটেল ভবিষ্যতে রাজশাহীর মানুষের জন্য প্রাইম ঠিকানা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।এই অত্যাধুনিক সিটি সেন্টারের সপ্তম তলা থেকে ১৮তলা পর্যন্ত রেডিসন হোটেল থাকবে।নিচে তার লবি থাকবে। গ্রাউন ফ্লোরে বুক স্টল হিসেবে থাকবে।এই শপিংমল নিয়ে যে প্ল্যান করা হয়েছে তা সম্পন্ন করে খুব তাড়াতাড়ি এই সিটি সেন্টারের পূর্ণাঙ্গ উদ্বোধন করা হবে।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, এনা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোসলেহ্ উদ্দিন,জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিন, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন, ১৫নং কাউন্সিলর আব্দুল সোবহান, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাসেল জামান,সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শিরিন আরা খাতুন, আয়েশা খাতুন, মুক্তিসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও গণ্যামান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন |
উল্লেখ্য, অতীতে সোনাদীঘি ছিল অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র। সোনাদীঘির চারপাশ উন্মুক্ত ছিল। ১৯৮০-৮১ সালের দিক থেকে সোনাদীঘির চারপাশে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়। ঢাকা পড়ে সোনাদীঘির মুখ। রাস্তা থেকে আর সোনাদীঘি দেখা যেত না তখন। সোনাদীঘির হারানোর ঐতিহ্য ফিরে আনতে ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে উদ্যোগ নেন সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) এর আওতায় ‘এনা প্রপার্টিজ’ নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে ১৬ তলাবিশিষ্ট ‘সিটি সেন্টার’ নির্মাণ ও সোনাদীঘিকে সাজানোর চুক্তি করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের প্রথম মেয়াদের সময়কালে (২০০৮-১৩) এর নির্মাণকাজ এগোলেও পরবর্তী ৫ বছর কাজ বন্ধ হয়ে থাকে। ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্বগ্রহণের পর সিটি সেন্টার ও সোনাদীঘিকে সাজানোর কাজে গতি ফেরান মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থাপনা, মসজিদ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সোনাদীঘিকে উন্মুক্ত করা হয়। বৈধ ব্যবসায়ীদের সিটি সেন্টারে পুর্নবাসন করা হয়। নির্মাণ কাজ ও সাজানো শেষে সিটি সেন্টার হয়ে উঠছে অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্র আর সোনাদীঘি দৃষ্টিনন্দন বিনোদনকেন্দ্র। দিঘিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হচ্ছে পায়ে হাঁটার পথসহ মসজিদ, এমফি থিয়েটার (উন্মুক্ত মঞ্চ) ও তথ্যপ্রযুক্তি পাঠাগার।
আরবিসি/২৫ ফেব্রুয়ারি/ রোজি