স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে নতুন ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, এ দেশের জনগণ অবশ্যই জানেন, সামরিক জান্তা জিয়াউর রহমান পঞ্চম সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সংবিধান বদলে যে রাষ্ট্রচরিত্র নির্ধারণ করেছিলেন, তা ছিল প্রগতির বিরুদ্ধে পশ্চাতপদতার সংস্কার। বিএনপি দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিতে নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তাদের ১০ দফা সেই নতুন ষড়যন্ত্রেরই রূপরেখা। বিএনপি জামাতের নতুন এই ষড়যন্ত্র ও অন্ধকারের শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শনিবার বিকালে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে দলের রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মানুষের জীবনে এখন অস্থিরতা ও আস্থাহীনতা বিরাজ করছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিার সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমনন্ত্রী। ভোট চান, আপত্তি নাই। তবে কেবলমাত্র নিজেদের জন্য নয়, সেই ভোট চাইতে হবে ১৪ দলের জন্য, সকল অসাম্প্রদায়িক শক্তির জন্য। আজকে মিত্রদের ঐক্যের প্রয়োজন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি, সেই বাঁধন শিথিল থেকে শিথিলতর হয়। মুখে কথা থাকে এক, কাজে সেটা মিলে না।
দেশে বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস, জ্বালানি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান এই নেতা বলেন, গরীব মানুষ অনেক কষ্টে আছে। মানুষের এখন মূল প্রশ্ন আমরা বাঁচব কীভাবে? মূল্যস্ফীতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি সংকট; এমনকি আমরা যে রুটি দিয়ে নাস্তা করি, সেই গমেরও সঙ্কট। মানুষ প্রতি মুহূর্তে পথ খুঁজছে। কীভাবে বাঁচব, কীভাবে এগোব। কাজেই গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানির অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি প্রত্যাহার করুন, গরীব মানুষের কষ্ট লাঘবে উদ্যোগ নিন।
টানা তিন বারের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিতে রাজশাহীবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে মেনন আরো বলেন, এই রাজশাহীকে বিএনপি জামায়াত জোট সরকার একসময় জঙ্গিবাদের চারণ ভূমিতে পরিণত করেছিল। তাদের ভয়ে, আতঙ্কে সাধারণ মানুষ বাইরে বের হতে পারেনি। আপনাদের নেতা কমরেড বাদশা সেদিন জীবন বাজি রেখে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। সেদিন তার নেতৃত্বে জঙ্গিবাদ বিরোধী লড়াই গড়ে উঠেছিল বলেই আজকে রাজশাহীর মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। এর জন্য আমরা কৃতিত্ব চাইনা। শুধুমাত্র চাইবো আবারো যারা সেই অশান্ত পরিবেশে ফিরে যেতে চায়; তাদের প্রত্যাখ্যান করে ফজলে হোসেন বাদশার নেতৃত্বেই রাজশাহীকে এগিয়ে নিন।
সব ক্ষেত্রে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে মন্তব্য করে মেনন বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এর পাশাপাশি আমাদের দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় লোকের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। যার ফলে উন্নয়নের পাশাপাশি বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের ৪ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। বর্তমানে মুষ্টিমেয় লোকেরা যেসব সম্পদ উপার্জন করেছে, সেগুলো দুর্নীতি, ঋণখেলাপি ও বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে অর্জন করেছে। আর এসবে প্রশ্রয় এসেছে ক্ষমতা থেকে।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম যেদিন সংসদে দাঁড়াই সেদিন দলের ও নিজের কোন কথা বলিনি। সেদিন বলেছি; রাজশাহীর মানুষের দুর্ভোগের কথা। সম্প্রতি সংসদে দাবি তুলেছিলাম, রাজশাহীর সাথে ঢাকার নির্বিচ্ছিন্ন যোগাযোগের জন্য বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশ দিয়ে নতুন রেল সেতু করার। রেলমন্ত্রী যতক্ষণ এটি মেনে নেন নি, ততক্ষণ আমি আমার বক্তব্য চালিয়ে গেছি। আজকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশ দিয়ে রেল সেতু হচ্ছে। এটি হয়ে গেলে আমার এলাকার কৃষকের ফসল সহজেই ঢাকায় পৌঁছাবে। তাদের আত্মসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
আরবিসি/২৫ ফেব্রুয়ারি/ রোজি