• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

ভারতের হাসপাতালের জাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট চক্রের দুই সদস্য আটক

Reporter Name / ১১০ Time View
Update : মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : চিকিৎসা করানোর কথা বলে নেওয়া হতো চিকিৎসা ভিসা। এজন্য দালালদের দ্বারস্থ হতেন অনেক ভিসাপ্রত্যাশী। আর টাকার বিনিময়ে ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালের জাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরি করে দিত একটি প্রতারক চক্র।

এমন অভিযোগে সেই প্রতারকচক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে রাজশাহী মহানগর ডিবি পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে জাল অ্যাপয়ন্টমেন্টের চাঞ্চল্যকর এই তথ্য।

তাদের কাছ থেকে ভারতের হাসপাতালের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরির কাজে ব্যবহৃত একটি কম্পিউটার, কালার প্রিন্টার ও স্ক্যানারসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে পুলিশ।

আটকরা হলেন- শেখ মো. এনামুল হাসান তাসিন (২০) ও মো: রায়হান কবির (২১)। এনামুল রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার শিরোইল মাস্টারপাড়ার শেখ মো: আবু সাঈদের ছেলে ও রায়হান কর্ণহার থানার শিশাপাড়ার মো: ইসরাইলের ছেলে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম।
তিনি বলেন, নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার মোহনঘোষ এলাকার হেলাল আলী নামের এক ব্যক্তি ভারতে যাওয়া জন্য গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় বোয়ালিয়া থানাধীন বর্ণালী মোড়ের ভারতীয় ভিসা অফিসে আসেন। তিনি ভিসা তৈরির জন্য অফিসের সামনে অপেক্ষা করার সময় অজ্ঞাতনামা একজনকে ভিসা প্রসেসিংয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। এ সময় তাকে ‘রহমান লাইফ সল্যুউশন’ নামক একটি দোকান দেখিয়ে দেন ওই ব্যক্তি।

তিনি সেখানে গেলে আসামিরা তাকে বলে, ভিসা করতে হলে ভারতের হাসপাতালের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারসহ বিভিন্ন কাগজপত্র লাগবে।
তখন হেলাল আলী এসব কাগজপত্র কোথায় পাবেন জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্তরা জানায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিলে তারা সব কাগজপত্রই তৈরি করে দেবেন এবং তাদের দেওয়া কাগজপত্র ভারতের হাইকমিশনারের অফিসে জমা দিলেই দ্রুত ভিসা পেয়ে যাবেন।
এই কথার প্রেক্ষিতে হেলাল আলী তাদের ৩ হাজার ৪০০ টাকা দেন। কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তরা ভিসা পাওয়ার আবেদন ও ভারতীয় হাসপাতালের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে ভিসা অফিসে জমা দিতে বলেন। কথা অনুযায়ী হেলাল আলী কাগজপত্র ভিসা অফিসে জমা দেন।

পরের দিন সকাল ১১টায় হেলাল আলী খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন, আসামিদের দেওয়া ভারতীয় ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার জাল হওয়ায় তার ভিসা পাওয়ার কোনো সম্ভবনাই নেই। তখন তিনি আসামিদের কাছে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তারা বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে। পরে ভুক্তভোগী হেলাল আলী গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানান।

এই সংবাদের প্রেক্ষিতে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আল মামুনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ওই দোকানে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় এনামুল হাসান তাসিন ও রায়হান কবিরকে আটক করা হয়।

পরে তাদের কাছ থেকে জাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরির কাজে ব্যবহৃত একটি কম্পিউটার, একটি কালার প্রিন্টার ও একটি স্ক্যানার জব্দ করা হয়। তারা অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনের সহায়তায় ভারতীয় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের জাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

আরবিসি/১৪ ফেব্রুয়ারি/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category