আরবিসি ডেস্ক: গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ায় তৈরি হয়েছে মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। দুই দেশে ধসে পড়া হাজার হাজার ভবনের নিচ থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে একের পর এক লাশ। মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃত মানুষের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেলেও এখনও নিখোঁজ আছেন হাজার হাজার মানুষ। ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে প্রতিনিয়ত আসছে বাঁচার আকুতি। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া আর সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অনেককে উদ্ধারের সময় যেন দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে এর আগে খুব কমই পড়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার মানুষ। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাউত ওকতায়ে বলেছেন, তুরস্কে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখন পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হাজারও ভবনের ৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশি বাসিন্দা ইতোমধ্যে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল, শপিং মল, স্টেডিয়াম, মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, দেশের সাড়ে ৮ কোটি মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয় মোকাবিলায় তিনি দেশটির ১০টি জেলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্কের বন্দর থেকে কন্টেনারবাহী বিভিন্ন জাহাজ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দেশটিতে সোমবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানতেপ শহরের কাছের একটি বন্দর থেকে জাহাজগুলো সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ভূমিকম্পের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও গাজিয়ানতেপের ইসকেনদেরাউন বন্দর জ্বলছে। যে কারণে এই বন্দরে জাহাজ নোঙ্গর করা যাচ্ছে না বলে মঙ্গলবার দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালের দিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিনিধি কুয়েন্টিন সমারভিলে বলেন, বন্দরের চারপাশের বাতাস এখনও কালো ধোঁয়া আর পেট্রোলের পোড়া গন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, ভূমিকম্প আঘাত হানার পর গতকাল থেকেই এই বন্দর জ্বলছে। ভূমিকম্পের কারণে কন্টেনার উল্টে গিয়ে বন্দরে আগুন ধরে যায়।
দেশটির প্রধান জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এপি মোলার মারস্ক এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্দরে কখন স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে তা স্পষ্ট নয়। কার্গোটি তুরস্কের অন্যান্য বন্দরের মাধ্যমে মিসরের পোর্ট সাইদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সড়ক এবং বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরকারি ও দাতব্য সংস্থাগুলোর ওই অঞ্চলে সহায়তা পাঠানো কঠিন হয়ে পড়বে।
আরবিসি/০৭ ফেব্রুয়ারি/ রোজি