স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, ১৫ বছর আগে দেশের বাইরে গেলে ইমিগ্রেশনের সময় বাংলাদেশের পাসপোর্টের পাতা বারবার উল্টে বাঙালিদের হেয় করা হতো। ‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্রটি কোথায় অবস্থিত; এমন কটাক্ষ করে অপমানিতও করা হতো অনেক সময়। কিন্তু বর্তমান সরকারের অভুতপূর্ব উন্নয়ন ও আত্মমর্যাদাশীল বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে আর সেই সুযোগ নেই। আমাদের দেশ এখন বিশ্ব দরবারে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী মহানগরীর গোলজার বাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের নব নির্মিত ছয়তলা ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চার কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে গোলজার বাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন এ ভবন তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছে রাজশাহী জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এমপি বাদশার প্রচেষ্টায় তৃণমূল পর্যায়ের এই বিদ্যালয়ে আধুনিক ছয়তলা ভবন শিক্ষার মানকে আরো বিকশিত ও মানসম্মত করবে বলে মনে করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আগামী ২৯ তারিখ রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে সঠিক ধারণা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যত স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে পারেন, অন্য কেউ এতোটা স্পষ্ট করে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারে না। আমি মনে করি, আমরা এবং আমাদের সরকার এই দেশের মানুষের জন্য কী করেছে, সেটির বিস্তারিত ব্যাখা প্রধানমন্ত্রীর তার বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরবেন। সুতরাং রাজশাহীবাসীর কাছে আহ্বান জানাবো, আপনারা সকলেই সেদিন মাদ্রাসা যাবেন এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার মূল্যবান বক্তব্য শুনবেন।
অতিতের বিভিন্ন সরকারের ব্যর্থ উন্নয়নের কথা স্মরণ করিয়ে রাকসুর সাবেক এই ভিপি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে এদেশে দুইটি সামরিক সরকার ছিল। আমাদের এলাকার মানুষের জন্য তারা কতোটুকু অবদান রেখে গেছে, তা আমরা পরিষ্কারভাবে জানি। পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ জানে, তাদের আমলে সরকারি অর্থায়নে বাংলা ভাইয়ের বাহিনী প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে কোর্ট অঞ্চল পর্যন্ত এসেছিল। রাজশাহীর বিভিন্ন জেলা-উপজেলার মানুষ বাংলা ভাইয়ের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে পালিয়ে এসেছিল। এসব আমরা দেখেছি। সুতরাং রাজশাহীর মানুষ আর সেসব দেখতে চায় না। তারা শান্তি চায়, উন্নয় চায়।
আগামী এক বছরের মধ্যে রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেল চলাচলের ইঙ্গিত দিয়ে টানা তিনবারের এই সংসদ সদস্য বলেন, আপনারা যখন বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশ দিয়ে ঢাকা যাবেন তখন পাশে দেখবেন, সেই সেতুর পাশে আরেকটি পৃথক রেলসেতু তৈরী হচ্ছে। এই রেলসেতু শুধুমাত্র ঢাকার সাথেই যোগাযোগ করবে তা নয়, চট্টগ্রামের সাথেও যোগাযোগ স্থাপন করবে। এখন রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম যেতে আমাদের বিমান লাগে, তখন বিমানও থাকবে, রেল যোগাযোগও থাকবে। এর মধ্যে দিয়ে যে ব্যবসা বাণিজ্য হবে, তার মাধ্যমে এই এলাকার সমৃদ্ধি ঘটবে।
গোলজারবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, ১, ২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর তাহেরা খাতুন মিলি, গোলজার বাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল রউফ প্রমুখ। এসময় স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
আরবিসি/২১ জানুয়ারি/ রোজি