স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী আসছেন আগামী ২৯ জানুয়ারি। ওই দিন তিনি রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতির অংশগ্রহণে রাজশাহীতে সম্ভাব্য শেষ জনসভা এটি। ফলে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে বর্ণিল রূপে সাজছে রাজশাহী। রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, নিশান, তোরণের পাশাপাশি চোখ ধাঁধাঁনো আলোকসজ্জায় বিভাগজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজশাহী নগর ছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শুরু হয়েছে প্রচার মাইকিং।
জানা যায়, আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে জনসভায় যোগ দেয়ার আগে সকালে সারদা পুলিশ একাডেমী পরিদর্শন ও পুলিশ প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
দলীয় সূত্রে বলছে, প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভা সফল করতে রাজশাহী বিভাগজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্রের ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণে সাজতে শুরু করেছে পুরো উত্তরাঞ্চল। দেশের সরকার প্রধানকে বরণ করে নিতেই এতো আয়োজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে বর্ণিল রূপে সাজতে শুরু করেছে নগর। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও নতুন করে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। দলীয় সভাপতির নজরে আসতে রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, নিশান, তোরণ টানানোসহ নানা কর্মসূচি পালনে তাদের মাঝে রীতিমত প্রতিযোগিতা চলছে। স্থানীয় নেতারা আগমনী শুভেচ্ছা বার্তার প্রচারণা চালাচ্ছেন। পথে ঘাটে, অলিতে-গলিতে, হাটে-বাজারে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে ব্যানার ফেস্টুন নেই। সবখানেই এখন প্রধানমন্ত্রী আগমনের শুভেচ্ছা ও উন্নয়ন বার্তা। শীর্ষ নেতা থেকে জুনিয়র কর্মী সবাই প্রধানমন্ত্রীর আগমনের শুভেচ্ছা দিচ্ছেন ব্যানার আর ফেস্টুন ঝুলিয়ে। কোথাও কোথাও এক খাম্বাতেই আছে ৪/৫ নেতার শুভেচ্ছা। কিছু দূর পর পরই বানানো হয়েছে তোরণ। বিশেষ করে সমাবেশস্থল রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠ থেকে শুরু করে নগরীর বানেশ্বর হয়ে সারদা পুলিশ একাডেমির সড়ক পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা সবচেয়ে বেশি। নগরীর কোনো গলিও বাদ যাচ্ছে না। এছাড়াও সড়কের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশে রেকি করে পোস্টার লাগানো হচ্ছে। এভাবে নানা কৌশলে নেতাকর্মীরা পোস্টার লাগানোয় রাজশাহী হয়ে উঠেছে পোস্টারের নগরী।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, দলীয় সভাপতির সফর ও জনসভাকে ঘিরে ব্যানার-ফেস্টুন- পোস্টারে পুরো নগরীকে ছেঁয়ে দেয়া হবে। ওয়ার্ড, থানা পর্যায়ে স্থানীয় নেতাদের প্রচারণা চালাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সমাবেশের বেশকিছু আগে থেকে মাইক যোগেও প্রচারণাও শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে রাজশাহীবাসী অধীর অপেক্ষায় আছেন। তার আগমনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তার সম্মানে বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে পুরো রাজশাহীকে।
এদিকে, সরকার প্রধানের আগমন উপলক্ষে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও নিচ্ছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এরই মধ্যে সমাবেশস্থলে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। রাজশাহীজুড়ে নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করেছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে সামনে রেখে হেড কোয়ার্টারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে আগে থেকেই সক্রিয় রয়েছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহীতে একজন ভিভিআইপির প্রটোকলে যত সুবিধা লাগে তার সব কিছুই আমরা প্রস্তুত রেখেছি। এছাড়াও মাদ্রাসা মাঠে একটি অস্থায়ী পুলিশের তাবু টাঙ্গিয়ে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলছে। পাশাপাশি সাইবার টিম, বোম্ব ডিস্পোজাল টিম, সিআইডি, সাদা পোষাকি পুলিশ মোতায়েন আছে। সমাবেশের দিন নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে। এরই মঝে সিসি ক্যামেরাগুলো চেক করা হচ্ছে পাশপাশি নতুন ক্যামেরাও যোগ করা হচ্ছে।
আরবিসি/১৯ জানুয়ারি/ রোজি