স্টাফ রিপোর্টার : উপকূলীয় অঞ্চলে যে ধান উৎপাদন হয়, তা হয় না বরেন্দ্র অঞ্চলে। আবার নদী সমতল অঞ্চলে যে শাক-সবজি পাওয়া যায় তার সবটাই পাওয়া যায় না হাওর অঞ্চলে। তবে রাজশাহীতে আয়োজিত এক প্রদর্শনীতে এই চার অঞ্চলের ধান, ঔষধি গাছ ও শাক-সবজির পরিচয় পাওয়া গেছে।
রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত দুই দিনের যুব জলবায়ু সম্মেলনে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বরেন্দ্র অঞ্চল, নদী সমতল অঞ্চল, হাওর অঞ্চল এবং উপকূল অঞ্চলের চারটি স্টল ছিল। এলাকাগুলোর ফসল, শাক-সবজি আর ঔষধি গাছের নমুনা রাখা হয়েছিল স্টলগুলোতে।
হাওর অঞ্চলের স্টলে দেখা গেল ময়নামতি, রাঁধুনী পাগল, আর পারি না, খাইনল, বজ্যমুড়ি, মালা, স্বর্ণলতা, বিন্নি, বৌ সোহাগী, ঝাপি বোরো, পাইরজাত, পাখি বিরইন, পংখীরাজ, মধুশাইল, সুবাশ, মালশিরাসহ নানা নামের ধানের নমুনা পাত্রে পাত্রে সাজানো। মোটা কাগজের ওপরে লাগানো ছিল লইটা, কায়াকুলি,গাধাপুঁই, গাইগুয়াল্যা, রাধাতুলশিসহ নানা রকম শাক ও ঔষধি গাছ। কোনটি শাক আর কোনটি ঔষধি গাছ তাও লেখা ছিল।
উপকূলীয় অঞ্চলের স্টলে দেখা গেল দিশারী, বাঁশফুল, কলমিলতা, চারুলতা, নারকেল মুড়ি, সুভাষ, চিনিকানি, মরিচশাইলসহ নানা নামের ধান। ছিল ওই এলাকার সব দেশীয় সবজির বীজ এবং নানারকম শাকও। নদী সমতল অঞ্চলের স্টলে ছিল নানা রকম সবজির বীজ, ধান ও ঔষধি গাছের প্রদর্শনী। বরেন্দ্র অঞ্চলের স্টল দিয়েছিলেন উন্নত চুলার আবিষ্কারক রাজশাহীর তানোরের কবুলজান খাতুন। তাঁর স্টলে নানা রকম ধানের পাশাপাশি নানা আকার ও নামের উন্নত চুলাও রাখা হয়েছিল। ছিল এ অঞ্চলের সব ধরনের শাক-সবজির বীজও। বিভিন্ন স্থান থেকে সম্মেলনে যোগ দেওয়া যুবরা প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন।
মঙ্গলবার এই সম্মেলন শুরু হয়েছিল। বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) ও বরেন্দ্র অঞ্চল যুব সংগঠন ফোরাম ‘ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার, জলবায়ু সুবিচার’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে জলবায়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অংশ নেন জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত স্বশিক্ষিত কৃষিবিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদ, সাংবাদিক শরীফ সুমন, বারসিকের পরিচালক সৈয়দ আলী বিশ্বাস, প্রকৃতি গবেষক পাভেল পার্থ, বারসিকের গবেষক শহিদুল ইসলাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন বরেন্দ্র অঞ্চল যুব সংগঠন ফোরামের আহ্বায়ক শাইখ তাসনীম জামাল।
আরবিসি/২৮ ডিসেম্বর/ রোজি