আরবিসি ডেস্ক : উত্তরের জেলা দিনাজপুরে প্রতিনিয়ত তাপমাত্রা কমছে। সেই সঙ্গে প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হতে শুরু করছে জনপদ। কুয়াশার কারণে সকালেও আলো জ্বেলে চলছে যানবাহন।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসেই দেখা দেবে শৈত্যপ্রবাহ, সেই সঙ্গে হালকা বৃষ্টিপাতও হতে পারে। এতে তাপমাত্রা ৮ থেকে ৬ ডিগ্রি পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
দিনাজপুরে গত কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। আগের দিন সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কুয়াশা থাকছে। সূর্য উঠলেও প্রখরতা নেই। এই সময়টাতে লোকজন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ঘন কুয়াশার পাশাপাশি কনকনে ঠান্ডাও জেঁকে বসতে শুরু করেছে। কৃষিজীবী নিম্ন আয়ের মানুষের কাজে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা ঢেকে রেখেছে চারপাশ। সকাল ১০টা পর্যন্ত একই অবস্থা। যদিও সকাল ৯ টার পরেই সূর্যের দেখা মিলেছে, তবে প্রখরতা নেই। এই সময়টাতে সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।
দিনাজপুর শহরের পার্শ্ববর্তী সুখসাগর এলাকার লতিফুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে ইজিবাইক নিয়ে বের হই। এই সময়ে ইজিবাইকের চলাচল কম হওয়ায় যাত্রী ভালো পাওয়া যায়। তবে গত কয়েকদিন ধরে সকালে যাত্রীদের উপস্থিতি একেবারেই কম। শীতের কারণে মানুষজন বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। আমিও যে ইজিবাইক চালাচ্ছি তাতে প্রচন্ড ঠান্ডায় হাত-পা জড়ো হয়ে যাচ্ছে।’
একই এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে কিছু শাক বিক্রির জন্য সাইকেল নিয়ে বের হয়েছিলাম। সেগুলো বাহাদুরবাজারে দিয়ে আসলাম। কিন্তু সকালে এমন অবস্থা যে সাইকেলের হ্যান্ডেল ধরে রাখতে পারছিলাম না। ঠান্ডায় হাত বরফ হয়ে যাচ্ছিল যেন।’
সদরের চেহেলগাজী ইউনিয়নের গোপালগঞ্জ এলাকার ফিরোজ ইসলাম বলেন, ‘এখন ধানের বীজ বপন করার সময়। মাঠে আলু রয়েছে। যদি এমনভাবে কুয়াশা হয় তাহলে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে। এই সময়ে আমরা খুব ভয়ে থাকি। কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশা, তাই আলুতে বালাইনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে।’
রাজবাটী এলাকার সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচন্ড ঠান্ডা। কাজ-কাম হচ্ছে না। সকালে ঠান্ডার কারণে বের হওয়া যাচ্ছে না। এই সময়টা আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য একটু সমস্যাই বটে।’
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সোমবার ছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও আজ সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা ছিল। এই তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে যেতে পারে এবং এই মাসেই একটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে একটি হালকা বৃষ্টিপাতও হতে পারে।
আরবিসি/১৪ ডিসেম্বর/ রোজি