স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেছেন, বিএনপির ঘোষিত দশ দফা একাত্তরের পরাজিত শক্তি আর আগুন সন্ত্রাসের সাথে জড়িতদেরকে রক্ষা করার। কিন্তু তাদের সেই দশ দফা কোনদিন বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না। এখন আমরা রাজনৈতিক বক্তৃতার জবাব দিবো বক্তৃতায়; আর আপনারা যদি লাঠি দিয়ে আঘাত করেন সেই লাঠির জবাব আমরা লাঠিতে দিবো।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী নগরীর জয় বাংলা চত্বর (বাটার মোড়) এলাকায় ‘রাজনৈতিক দার্শনিক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জয়যাত্রা’ স্লোগানে বিজয় মিছিল পূর্বে সমাবেশে এসব কথা বলেন আসাদুজ্জামান আসাদ।
মহান বিজয়ের মাস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ এই বিজয় মিছিলের আহবান করেছিলেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মিছিলে যোগ দিতে জয় বাংলা চত্বরে জড়ো হন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। যাদের নেতৃত্বে ছিলেন দলীয় পদ ও দলের মনোনয়ন বঞ্চিত এবং স্থানীয় এমপিদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে দলে কোনঠাসা হয়ে পড়া স্থানীয় নেতারা।
জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন তারা। তারা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর করে তোলে পুরো এলাকা। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জয় বাংলা চত্বরে ট্রাকে উঠে জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। পরে সেখান থেকে বিজয় মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সাহেব বাজার, কুমারপাড়া, মনিচত্বর ঘুরে আবারো জয় বাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বিজয়ের মাসে আমরা রাজশাহীর মানুষ শপথ নিয়েছি। সমস্ত নৈরাজ্য আর সন্ত্রাসের দাঁত ভাঙা জবাব দেয়া হবে। আপনারা রাজনৈতিক বক্তৃতা দিতে চান? আমরা রাজনৈতিক বক্তৃতায় জবাব দিবো। আর আপনারা যদি লাঠি দিয়ে আঘাত দেন আপনাদের সেই লাঠির জবাব আমরা লাঠিতে দিবো।
আসাদ বলেন, বাংলাদেশে বিএনপির কিছু কিছু নেতা ঘোষণা দিয়েছিলেন ১০ তারিখ না কী সারা বাংলাদেশ দখলে নিবে। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। আমরা বলেছিলাম বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে শেখ হাসিনা যে কাজ করছে বাংলার মানুষ তার পক্ষেই থাকবে। ওরা বলেছিলো ওরা পল্টনেই সমাবেশ করবে। আমরা বলেছিলাম রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করতে দিবো না। ওরা চ্যালেঞ্জ করেছিলো। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছিলাম। তারা সেই চ্যালেঞ্জে পরাজিত হয়ে গরুর হাটে সমাবেশ করতে হয়েছে।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আজকের এই সমাবেশ থেকে পরিস্কার করে বলতে চাই, অপনারা যে দশ দফা দাবি দিয়েছেন, আপনাদের দফাতেই ভুল। বিএনপিতে কী কোন ভালো আইনজীবী নেই? তারা জানেন না? তত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনার সরকার বাতিল করে নি। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্বাতাধায়ক সরকার বাতিল হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি বলেছে, খালেদা জিয়াসহ আলেম ওলামাদের মুক্তি যাই। আলেম ওলামাদের নাম বলছেন না কেন? ভাসুরের নাম নিতে লজ্জা লাগে? দেলোয়ার হোসেন সাঈদির যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে নারী ধর্ষন ও মানুষ হত্যার দায়ে। আর মুমিনুল, তার তথাকথিত বউয়ের মামালায় জেলে আছে। আর কারা আছে নাম বলতে হবে। ব্যক্তিগত রোশানলে ফেলে আওয়ামী লীগ কাউকে জেলখানায় রাখেনি।
আসাদ আরও বলেন, বিএনপি জনগনের পক্ষে একটিও দফা উচ্চারণ করতে পারেনি। ওরা বলেছে, চাল ডালের দাম কমাতে হবে। ওরা বলেনি, ক্ষমতায় গেলে কী হবে। তারা রাজশাহীর সমাবেশে বলেছে এক দফা দাবি চাই। তাদের সিনিয়র নেতারা হয়তো বুঝেছেন সরকারকে এইভাবে পতন করা যাবে না। তাই তারা বিএনপির দশ দফা দাবি দিয়ে সারাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বিএনপির বন্ধুদের বলতে চাই, যদি বুকে সাহস থাকে ক্ষমতায় গেলে জনগনের জন্য কী করবেন বলেন। চালের দাম কী কমানোর ক্ষমতা আপনাদের আছে কিনা বলতে হবে। আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কমাতে পারবেন কি না বলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আজকের এই বিজয়ের মাসে পরিস্কার করে বলতে চাই, তাদের এই দশ দফা একাত্তরের পরাজিত শক্তি আর যারা আগুন সন্ত্রাসের সাথে জড়িত ছিলো তাদেরকে রক্ষা করার দশ দফা। এই দশ দফা মুক্তিযুদের চেতনায় এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যাওয়ার দশ দফা। এই দশ দফা উন্নত বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে চলা বাংলাদেশ, বিশ^ পরিস্থতি, করোনা পরিস্থতি, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পরে গোটা পৃথিবী যখন ভয়াবহ সংকটে সেই সংকট উত্তরনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে চেষ্টা করছে সেই চেষ্টাকে ব্যহত করার দফা।’
মিছিলের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আসাদ বলেণ, ‘আপনারা পাড়ায় মহল্লায় ফিরে গিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে শেখ হাসিনার উন্নয়ন আর শেখ হাসিনার সমৃদ্ধি নিয়ে কথা বলবেন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বদরুজ্জামান রবু, রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পূনর্বাসন সম্পাদক আখতারুজ্জামান আখতার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ, সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মুক্তার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তৌহিদ আল হোসেন তুহিন, মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী, মুন্ডুমালা পৌরসভার বর্তমান মেয়র সাইদুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ’ আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার শামসুল হক প্রমূখ।
আরবিসি/১৩ ডিসেম্বর/ রোজি