• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন

টানা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি ফ্রান্সের

Reporter Name / ১১১ Time View
Update : রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : ফরাসি সৌরভে সুরভিত এখন গোটা দুনিয়া। ইনজুরির কারণে একঝাঁক তারকা ফুটবলার খেলতে না পারলেও চলমান কাতার বিশ্বকাপেও আলো ছড়িয়ে চলেছে ফ্রান্স ফুটবল দল। শনিবার রাতে আসরের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে অন্যতম ফেভারিট ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে এসেছে ফ্রান্স।

এর ফলে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দেখিয়েছে দিদিয়ের দেশমের দল। চার বছর আগে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলে চ্যাম্পিয়ন হয় ফরাসিরা। এবার এনগালো কান্টে, পল পোগবার মতো তারকা মিডফিল্ডার ও করিম বেঞ্জামার মতো বিশ্বখ্যাত ফরোয়ার্ডকে চোটের কারণে পায়নি তারা। এরপরও একঝাঁক তরুণ ও পরীক্ষিত ফুটবলার চোখ ধাঁধানো ধারাবাহিক পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে চলেছেন। রক্ষণভাগে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও সেটা মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগের তারকারা অসাধারণ মুন্সিয়ানায় পুষিয়ে দিচ্ছেন। তাই তো গতবারের সাফল্য ধরে রাখার পথে দারুণভাবে এগিয়ে চলেছে ফরাসিরা। এখন তাদের সামনে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবশেষ রকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল টানা দুইবার জিতেছে সোনার ট্রফি। সেটা কিংবদন্তি পেলের আমলে অর্থাৎ ১৯৫৮ ও ১৯৬২ বিশ্বকাপ।

৬০ বছর পর সেই কীর্তি গড়ার চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ এখন ফ্রান্সের সামনে। সেই লক্ষ্যে আপাতত তাদের পেরোতে হবে মরক্কো বাধা। আগামী বুধবার আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে উত্তর আফ্রিকার দেশটির মুখোমুখি হবে কোচ দিদিয়ের দেশমের দল। এই ম্যাচ জিততে পারলে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে পৌঁছে যাবে ফরাসিরা। সেই সঙ্গে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অসামান্য গৌরবগাথার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। ফ্রান্স-মরক্কো ম্যাচের আগের দিন মাঠে গড়াবে প্রথম সেমিফাইনাল।

অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে অন্যতম ফেভারিট আর্জেন্টিনা খেলবে গত আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। দুটি ম্যাচই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত একটায়। মজার বিষয় হচ্ছে, ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের মতো এবারও ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে ফাইনাল হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। দল দুটি সেমিতে নিজ নিজ ম্যাচ জিতলেই চার বছর আগের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি হয়ে যাবে। আগেবার ফাইনাল মহারণে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স।

আর প্রথমবার ফাইনালে উঠে হৃদয়ভাঙার ব্যথায় কাতর হতে হয় মডরিচ, পেরেসিচদের। এবার ফরাসিদের মতো ক্রোয়েটদেরও টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলার হাতছানি। দুদলই যদি সেমিতে জিততে পারে, তাহলে ক্রোয়েশিয়ার সামনে সুযোগ আসবে আগেরবারের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার। এবার ৬০ বছর পর প্রথম কোনো দল হিসেবে শিরোপা ধরে রাখার সম্ভাবনা জাগিয়েছে ফ্রান্স। হাইভোল্টেজ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর দারুণ এ সম্ভাবনা জেগেছে। ম্যাচটির পর ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম বলেন, এটি দুর্দান্ত, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচ ছিল। আমরা অসাধারণ এক ইংল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে খেলেছি। যারা কৌশল ও শারীরিক দিক থেকে শক্তিশালী।

১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা আরও বলেন, এই ছেলেদের আবারও শেষ চারে উঠতে পারা দারুণ। এমন মুহূর্তগুলোয় সবাই চায় সময়টা যেন থেমে যায়। এই জয় আমরা উপভোগ করছি। যদিও দুটি পেনাল্টি দিয়েছিলাম আমরা। তবে কিছুটা ভাগ্যবান। প্রাণপণ চেষ্টা ও সাহস দিয়ে আমরা ব্যবধান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। কোয়ার্টার ফাইনালের আরেক ম্যাচে ১-০ গোলে পর্তুগালকে হারিয়ে আফ্রিকার প্রথম দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করেছে মরক্কো। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা দলটি এখন পর্যন্ত আসরে মাত্র একটি গোল হজম করেছে। সেটা কানাডার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে। ওই গোলটিও প্রতিপক্ষ করতে পারেনি; হয়েছিল আত্মঘাতী। এমন উড়তে থাকা মরক্কোকে তাই হালকাভাবে নিচ্ছেন না দেশম। ম্যাচে তার দল ফেভারিট হলেও সেসব নিয়ে ভাবছেন না। তার মাথায় মাঠের লড়াইয়ে ঠিকঠাক নিজেদের নিংড়ে দেওয়া। সেমির ম্যাচ নিয়ে দেশম বলেন, আমরা পরের ম্যাচের জন্য খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নেব।

মরক্কো প্রশংসার দাবিদার। হয়তো তাদের সেমিতে আসাটা প্রত্যাশিত ছিল না। কিন্তু তারা একটি মাত্র গোল হজম করেছে। এরপর তাদের এখানে দেখা মোটেও অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। আমাদের সতর্ক থেকেই খেলতে হবে। ইংলিশদের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের জয়ের অন্যতম নায়ক ফরোয়ার্ড অলিভিয়ের জিরুড। ম্যাচে ফরাসিদের জয়সূচক গোলটি তিনিই করেন। এখন পর্যন্ত চার গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় দুইয়ে আছেন ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা এই গোলদাতা। পাঁচ গোল করে সবার ওপরে জিরুর সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপে। ইংলিশদের হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে জিরুড বলেন, আমরা কিছুটা ভাগ্যবান, কারণ হ্যারি কেন পেনাল্টি মিস করেছে। কিন্তু আমরা আমাদের সব উজাড় করে দিয়েছি, জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেছি। এটা আমাকে ২০১৮-এর মানসিকতার কথা মনে করিয়ে দেয়। এই দলটাও শিরোপার দাবিদার।

আরবিসি/১১ ডিসেম্বর/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category