• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন

উজ্জীবিত আর্জেন্টিনার সামনে আজ অস্ট্রেলিয়া

Reporter Name / ৯৮ Time View
Update : শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরবিসি ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপে আজ থেকে শুরু হচ্ছে শেষ ষোলোর লড়াই। যে লড়াইয়ে হারলেই বাজবে বিদায়ের ঘণ্টা। নক আউট পর্বের প্রথম দিনেই মাঠে নামছে হট ফেভারিট আর্জেন্টিনা। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে একে অপরের মুখোমুখি হবে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা আর ‘ডি’ গ্রুপ থেকে রানার্সআপ হয়ে আসা সকারুজরা।

টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে কাতার বিশ্বকাপের মিশন শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। এমন অদম্য পারফর্মেন্স আর মেসি-ডি মারিয়াদের শেষ বিশ্বকাপ বলে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর আবার শিরোপা জয়েরও স্বপ্ন বুনে আলবিসেলেস্তেরা। অথচ শুরুতেই অঘটন! সৌদি আরবের কাছে হেরে যায় লিওনেল স্কালোনির দল। ফলে বিশ্বকাপ জয় তো দূরের কথা গ্রুপ পর্বের বাধা অতিক্রম করতে পারবে কিনা তা নিয়েই জেগেছিল সংশয়। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে পরের দুই ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই ২০২২ বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে জায়গা করে নেয় দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে তারা ২-০ গোলে পরাজিত করে পোল্যান্ডকে। সেই ম্যাচে তাদের পারফর্মেন্সও ছিল চমকপ্রদ। লিওনেল মেসি পেনাল্টি মিস করলেও দলীয় পারফর্মেন্সে গোটা দুনিয়ার ফুটবলপ্রেমীদেরই নজর কেড়েছে লিওনেল স্কালোনির দল। আর তাতেই সৌদি আরবের কাছে হারের পর ফিকে হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটা আবারও নতুন করে জাগে ম্যারাডোনার উত্তরসূরিদের।

সেই পথে আজ তাদের সামনে বড় বাধা অস্ট্রেলিয়া। কেননা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, টুর্নামেন্টের ডাকহর্স ডেনমার্ক আর আফ্রিকান শক্তি তিউনিসিয়ার সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল সকারুজরা। সেখান থেকেই ফ্রান্সের সমান সর্বোচ্চ দুটি জয় তুলে ডেনমার্ক-তিউনিসিয়াকে বিদায় করে নকআউট পর্বের টিকিট নিশ্চিত করে তারা। এমন ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে শেষ ষোলোর ম্যাচেও দারুণ আশাবাদী অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় রাউন্ডে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দেওয়ারও স্বপ্ন দেখছে সকারুজরা।

তাছাড়া অতীত অভিজ্ঞতা থেকেও জয়ের স্বপ্ন দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ গ্রাহাম আর্নল্ড। ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে অস্ট্রেলিয়ান যুব দলের কোচ ছিলেন তিনি। সেবার ‘সি’ গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল এই গ্রাহামের দল। সেই স্মৃতি সামনে আনলেন অস্ট্রেলিয়ান কোচ। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই (আমরা যদি জিততে যাচ্ছি)। আমি গত বছর টোকিওতে অলিম্পিক দলের কোচ ছিলাম। আমরা আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিলাম। এটি একটি হালকা নীল-সাদা ডোরাকাটা জার্সির বিপক্ষে একটি হলুদ জার্সির লড়াই, ১১ জনের বিপক্ষে ১১ জন। আমরা শুধু দেশকে দেখাইনি, আমরা বিশ্বকে দেখিয়েছি, তা হলো আমরা একটি দল এবং একটি গোষ্ঠী হিসাবে একতাবদ্ধ। আমরা একে অপরের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমার মনে হয় না কেউ আশা করেছিল যে আমরা একটি ম্যাচ জিতব কিন্তু তারপর একটি বিশ্বকাপে আমার দুটি ম্যাচ জিতে নিয়েছি, এটা সত্যিই চমৎকার। জীবনে প্রায়ই এ ধরনের সুযোগ পাবেন না। তাই এটাকে আরও বিশেষ কিছুতে পরিণত করতে হবে। আমাদের সেরা শটটি দিতে হবে এবং জাতিকে আরও গর্বিত করতে হবে।’

তবে অর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়া এখন পর্যন্ত ৭বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে আলবিসেলেস্তেদের ৫ জয়ের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার জয় মাত্র একটিতে। বাকি ম্যাচটি ড্র। দুই দলের শেষ ম্যাচটি হয় ২০০৭ সালে। যেখানে ১-০ গোলে জিতে লাতিন আমেরিকার দেশটি। মুখোমুখি লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়টি অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৮৮ সালে প্রথম দেখায় ৪-১ গোলে জিতেছিল ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশটি। আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় জয়টি ২০০৫ সালে, ৪-২ গোলে। সবচেয়ে বেশি গোল মেসিদের। তাদের ১৫ গোলের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার গোলসংখ্যা ৭। র‌্যাঙ্কিংয়েও আকাশ-পাতাল তফাৎ। আর্জেন্টিনার অবস্থান যেখানে তৃতীয় সেখানে অস্ট্রেলিয়া ৩৮ নম্বরে। তবে এসব পরিসংখ্যান দেখে অস্ট্রেলিয়াকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না অর্জেন্টিনার কোচ। সেই শিক্ষাটা তো একেবারেই তরতাজা। তাদেরকে হারিয়েই যেখন এবারের বিশ্বকাপে সৃষ্টি হয় সৌদি-রূপকথা। তাই স্কালোনির সাবধানী বার্তা, ‘তারা সবাই কঠিন, সৌদি আরবের সঙ্গে আমরা সেটা দেখেছিলাম। যদি আপনি ভাবেন অস্ট্রেলিয়া সহজ হবে, তাহলে ভুল। কারণ এই বিশ্বকাপে কঠিন দলগুলোর বাধা অতিক্রম করেছে তারা।’ অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্লেষণ করেই মাঠে নামবে আলবিসেলেস্তেরা, বললেন স্কালোনি, ‘আমাদের প্রতিপক্ষকে বিশ্লেষণ করতে হবে। ভাবতে হবে কীভাবে তাদের আঘাত করা যায়।’ শেষ ষোলোর ম্যাচের আগে মাত্র দুদিনের বিশ্রাম ভাবাচ্ছে স্কালোনিকে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা অদ্ভুত, মাত্র দুদিন পরই খেলতে যাচ্ছি। আমি এটা বুঝতেই পারি না।’
২০০৬ বিশ্বকাপে সর্বশেষ শেষ ষোলোতে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া। ১৬ বছর পর আবারও নকআউট পর্বে খেলছে তারা। শুধু শেষ ষোলো নয়, অজি কোচের স্বপ্ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলারও। যেখানে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে চায় ব্রাজিলকে। আর্নল্ড বলেন, ‘ব্রাজিল (প্রতিপক্ষে হিসেবে)। আমরা সেরাদের বিপক্ষে খেলতে চাই। বিশ্বকাপে ৩২ দল খেলে, এখন আমরা শেষ ষোলোয়। সেরাদের বিপক্ষে খেলে আমরা নিজেদের পরীক্ষা করতে চাই এবং বাকি বিশ্বকে দেখাতে চাই আমাদের সংস্কৃতি কী। আমি সম্ভবত ৬ কিংবা ৮ মাস ধরে এটা বলে আসছি।’ তবে এবারের বিশ্বকাপে ফেভারিট আর্জেন্টিনা দলটিও বেশ শক্তিশালী। অভিজ্ঞ মেসি-ডি মারিয়াদের ছাড়াও দেখা গেছে তারুণ্যের জয়গান। বিশেষ করে তিন তরুণের পারফর্মেন্স এবার বেশ প্রশংসনীয়।

মেক্সিকোর বিপক্ষে লিওনেল মেসির গোলের পর এনজো ফার্নান্দেজের চোখ জুড়ানো গোল। এর পর পোলিসদের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মেসির পেনাল্টি মিসের পরও দুই তরুণ অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার এবং হুলিয়ান আলভারেজের গোলই যে নিশ্চিত করে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।

আরবিসি/০৩ ডিসেম্বর/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category